সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: বাংলায় প্রকাশিত হয়েছে খসড়া ভোটার তালিকা। নাম বাদ গিয়েছে ৫৮ লক্ষের বেশি ভোটারের। তাতে রোহিঙ্গা বা অনুপ্রবেশের বিষয়টি কার্যত ধুয়ে মুছে গিয়েছে। এই দাবি করে বিজেপি-সহ কমিশনকে বিঁধলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাকে অপমান করা বিজেপি নেতাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে দাবি করলেন তিনি। সংসদের বাইরে বললেন, "অনুপ্রবেশ নিয়ে বিজেপির যে সমস্ত নেতারা বাংলাকে অসম্মান করেছেন, তাঁদের ক্যামেরার সামনে এসে কান ধরে ক্ষমা চাওয়া উচিত।" পাশাপাশি তাঁর দাবি, বিএলওদের মৃত্যুর জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন।
এসআইআর প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই বঙ্গীয় বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীরা দাবি করে আসছেন বাংলায় অনুপ্রবেশ ঘটেছে। অবৈধভাবে রোহিঙ্গারা ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন। তৃণমূলের দাবি, এই প্রক্রিয়ায় ১ কোটি রোহিঙ্গার নাম বাদ যাবে বলে হাওয়া গরম করছিল বিজেপি। তবে খসড়া তালিকা প্রকাশের পর নির্দিষ্ট করে কোনও রোহিঙ্গার তথ্য প্রকাশ করেনি নির্বাচন কমিশন। কমিশনের প্রকাশিত তথ্যকে হাতিয়ার করেই অভিষেকের তোপ, "এক কোটি রোহিঙ্গা নাকি বাদ যাবে, কোথায়? কতজন বাংলাদেশি ধরা পড়ল? দেড়-দুই শতাংশ নাম তো সব রিভিশনেই বাদ যায়, এটা তো স্পেশাল রিভিশন। সেই অনুপাতেই নাম বাদ পড়েছে। এক কোটি নাম বাদ যেতে চলেছে বলে দাবি করা হচ্ছিল, কিছু বলার থাকলে সরকারিভাবে বলুক।" এরপরই তাঁর সংযোজন, "অনুপ্রবেশের কথা বলে বাংলাকে যে বিজেপি নেতারা অপমান করেছেন, তাঁদের ক্যামেরার সামনে এসে কান ধরে ক্ষমা চাওয়া উচিত।" একইসঙ্গে বিএলওদের মৃত্যুর জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, কীভাবে ফর্ম আপলোড করতে হবে, কীভাবে অ্যাপ পরিচালনা করতে হবে, সেই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ বিএলওদের দেওয়া হয়নি।
এসআইআরের পাশাপাশি, একশো দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধেছেন তিনি। কলকাতা হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট বারবার বলা সত্ত্বেও কেন্দ্র একশো দিনের কাজ শুরু করেনি। বাংলাকে পরিকল্পনা মাফিক বঞ্চনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর। এই প্রকল্প বাবদ বাংলার ৫২ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে বলে দাবি করেছেন অভিষেক। রাজ্য সরকার নিজেদের উদ্যোগে একশো দিনের টাকা মিটিয়েছে, সেই কথাও বলেছেন তিনি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রশ্ন উত্তর পর্বে বাংলার বিধানসভার নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের বিষয় উঠে আসলে অভিষেক জানান, সিদ্ধান্ত নেবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বাংলায় কংগ্রেসের সংগঠন দুর্বল, তৃণমূলকে জেতার জন্য হাত শিবিরের সঙ্গে জোট বাঁধার প্রয়োজন নেই। একার ক্ষমতায় তৃণমূল আবার ক্ষমতায় আসবে। তিনি বলেন, "নরেন্দ্র মোদি আত্মনির্ভর ভারতের কথা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বনির্ভর বাংলা গড়ে তুলেছেন। কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের জোটের প্রয়োজন নেই। সিদ্ধান্ত নেত্রী নেবেন। তবে এবার নির্বাচনে তৃণমূল আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরবে।"
