সুকুমার সরকার, ঢাকা: অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল ‘বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি’ (বিএনপি)। দুর্নীতির দায় দলনেত্রী তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার (Khaleda Zia) কারাবাস পর্ব শুরু হওয়ার পর আরও বিপাকে পড়েছে দলটি। এহেন পরিস্থিতিতে সংকট আরও বাড়িয়ে বেগম জিয়ার সঙ্গে পুত্র তারেক জিয়ার একাধিক বিষয়ে মত মিলছে না বলে খবর।
[আরও পড়ুন: আরও ‘একঘরে’ ট্রাম্প, এবার বিডেনের দিকে ঝুঁকছেন রিপাবলিকানদের একাংশ]
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গত সেপ্টেম্বরে মতপার্থক্যের বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আসে। ঢাকা-৫ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পান সালাহউদ্দিন আহমেদ। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ঢাকা-৪ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন তিনি। তখন ঢাকা-৫ আসনে প্রার্থী ছিলেন নবীউল্লাহ। তাঁর মনোনয়ন হয় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ইচ্ছায়। এবার নবীউল্লাহর বদলে সেখানে সালাহউদ্দিন আহমেদকে প্রার্থী করতে ভূমিকা রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বাদ পড়েন নবীউল্লাহ। পরিবারের ঘনিষ্ঠজন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-৫ আসনে উপনির্বাচনে প্রার্থী বদল নিয়ে মায়ের সঙ্গে তারেকের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। দলের বিভিন্ন বিষয়ে এমনটা জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গেও হচ্ছে। খালেদা জিয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় দণ্ডিত হওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইচ্ছেন তারেক। শুধু তাই নয়, এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ২০ দলের শরিক জামাতে ইসলামির প্রার্থীদের ‘ধানের শীষ’ প্রতীক দেওয়া নিয়েও পুত্রের সঙ্গে মনোমালিন্য হয় খালেদার। তারেক রহমান-সহ দলের স্থায়ী কমিটির মত ছিল, যেহেতু জামাতকে একটু আলাদা রাখতেই বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে, তাই দলটিকে ‘ধানের শীষ’ না দেওয়াই ভালে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কারাগার থেকে খালেদা জিয়ার বার্তা আসে জামায়াতকে ‘ধানের শীষ’ দেওয়ার। আর সেখানেই বাধে সংঘাত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, দুর্নীতির দায়ে খালেদা জিয়া বন্দি। চাইলেও তিনি বাংলাদেশের (Bangladesh) সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরতে পারছেন না। ফলে ১৯৮৮ সালে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য, ২০০২ সালে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, ২০০৯ সালে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, সর্বশেষ ২০১৮ সালে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়া তারেক রহমানই আপাতত দলের মূল নেতা। তিনি লন্ডন থেকেই বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর সেখানেই খালেদাপন্থীদের সঙ্গে লড়াই শুরু হয়েছে তাঁর।