অভিরূপ দাস: দিন তিনেক ধরেই শাটার বন্ধ। ঝুলছে তালা। মিষ্টি কিনতে এসে ফিরে গিয়েছেন ক্রেতারা। এলাকায় কান পাতলেই ফিসফাস। বন্ধ হওয়ার পথে অর্ধশতাব্দীরও বেশি পুরনো পুঁটিরাম। পুরনো কলকাতার নামজাদা মিষ্টির দোকান বলতে যে নামগুলো উঠে আসে তার মধ্যে অন্যতম পুঁটিরাম। ৪৬/৪ মহাত্মা গান্ধী রোডে আশি বছরের পুরনো দোকানটি আপাতত বন্ধ। হয়তো খুলবে না কোনওদিন। চিরতরে বন্ধ হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে মালিকের অসুস্থতা। সূত্রের খবর, শারীরিক ভাবে অসুস্থ আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকার পুঁটিরামের মালিক পরেশ মোদক। তাঁর একমাত্র পুত্র মুম্বাই নিবাসী। দোকান চালাবে কে? পাকাপাকি ভাবে তাই পুঁটিরাম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিক পরেশ মোদক। আর্মহাস্ট স্ট্রিট এলাকার বাসিন্দাদের মন খারাপ। বিগত পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের রসনা তৃপ্তি করেছে পুঁটিরাম। এলাকার বাসিন্দা অভিজিৎ দে জানিয়েছেন, পুঁটিরাম বন্ধ হয়ে গেলে তার সঙ্গেই হারিয়ে যাবে প্রাণহরা, সরভাজা, সরপুরিয়ার সেই অনবদ্য স্বাদ।
সুখবর একটাই। বইপাড়ার সূর্য সেন স্ট্রিটের পুঁটিরাম স্বমহিমায় বিরাজমান। আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকার বাসিন্দারা বাধ্য হয়ে একটু বেশি হেঁটে সেখানেই আসছেন। শহরে পুঁটিরামের কটা শাখা? সূর্য সেন স্ট্রিট পুঁটিরামের মালিক ইন্দ্রজিৎ মোদক জানিয়েছেন, "দুই দোকানের মালিকানা আলাদা। আলাদা ছিল কারখানাও। সেই পুঁটিরামের বয়স একশোর ওপর হলেও আমহার্স্ট স্ট্রিট পুঁটিরামও নেহাত কম নয়। এই ২০২৪ সালে ৮০ বছরে পড়েছে ৪৬/৪ মহাত্মা গান্ধী রোডের পুঁটিরাম। তাঁর সংযোজন, ঠাকুরদা জীতেন্দ্রনাথ মোদক ওই দোকান যৌতুক হিসেবে এটাই দিয়েছিলেন মেয়ে-জামাইয়ের বিয়েতে। সেই থেকেই পথ চলা শুরু। দিন তিনেক আগেই যাতে দাঁড়ি পড়েছে।
[আরও পড়ুন: গলায় আটকে গিয়েছিল ছুঁচাল ধাতব বস্তু, শিশুর প্রাণ বাঁচাল কলকাতা মেডিক্যাল]
পুরনো কলকাতার একাধিক ঐতিহ্যশালী একাধিক দোকান এখন টিম টিম করছে। এমন হওয়ার কারণ? সূর্য সেন স্ট্রিটের পুঁটিরামের মালিক ইন্দ্রজিৎ মোদক জানিয়েছেন, "এই প্রজন্মকে ব্যবসায় আসতে হবে। তারা যদি শুধু চাকরির সন্ধান করে তাহলে মুশকিল। আমাদেরও তো বয়স হচ্ছে।"