সুলয়া সিংহ: পার্টনারশিপটা শুরু হয়েছিল বছর ছয়েক আগে। ২০১৯ সাল থেকে টালা প্রত্যয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে কলকাতা তথা বাংলাকে অভূতপূর্ব পুজো উপহার দিয়েছেন শিল্পী সুশান্ত পাল। তার পর একের পর এক ছক্কা হাঁকিয়েছেন। পরিপূর্ণ হয়েছে প্রত্যয়ের পুরস্কারের ভান্ডার। কিন্তু এমন এক চোখ ধাঁধানো জুটির সেঞ্চুরিটা অধরাই রয়ে গেল। ৯৯-তেই থামল ইনিংস। টালা প্রত্যয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটল সুশান্ত পালের।
এই কয়েক বছরে পুজোপ্রেমীরা ভালোই বুঝে গিয়েছিলেন যে টালা প্রত্যয়ে পা রাখলেই শিল্পীর এক অনবদ্য সৃজনের সাক্ষী থাকা যাবে। তাঁর ভাবনা বিস্মিত করেছে দেশ-বিদেশ থেকে আগত দর্শনার্থীদের। কখনও দর্শকরা বিচরণ করেছেন কল্পলোকে, আবার কখনও 'ঋতি' থিমের নেপথ্যে মণ্ডপে চলেছে ভাঙাগড়ার খেলা। গতবছর দুর্গার সঙ্গে নিজের যাপনের কাহিনী সাজিয়েছিলেন শিল্পী। চলতি বছর তাঁর থিম 'বিহীন' একইরকম ভাবে ভাবিয়েছে পুজোপ্রেমীদের। আলো-ছায়ার খেলা, সাউন্ড এফেক্টে ঈশ্বরের খোঁজে অন্য জগতে পৌঁছে গিয়েছেন দর্শকরা। ঠিক ছিল, শততম বর্ষেও টালা প্রত্যয়কে সাজাবেন নিজের হাতে। কিন্তু কার্যত আচমকাই ছন্দপতন।
বিজয়া দশমী থেকেই সাধারণত পরের বছরের পুজোর রোড ম্যাপ সাজাতে শুরু করে দেয় বড় কমিটিগুলি। টালা প্রত্যয়ও তার ব্যতিক্রম নয়। তারাও প্রত্যয়ী ছিল যে সুশান্ত শিবাণী পালই (২০২৪ সাল থেকে এই নামই লেখেন শিল্পী) হবেন শিল্পী। সেই মতো রাজিও হয়ে গিয়েছিলেন স্বনামধন্য শিল্পী। কিন্তু হঠাৎই ক্লাবকে তিনি জানিয়ে দেন, আগামী বছর এই পুজোটি তিনি করতে পারছেন না। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-কে শিল্পী ফোনে বলেন, ক্লাবের সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনও সমস্যার কারণেই তিনি এই পুজো থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নাহলে তাঁরও ইচ্ছা ছিল ২০২৫ সালে মনপ্রাণ দিয়ে টালা প্রত্যয়কেই সাজাবেন। তবে পরের বছর যে তিনি আরও একবার কেন্দুয়া শান্তি সংঘের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন, তা নিশ্চিত করেছেন।
টালা প্রত্যয়ের তরফে ধ্রুবজ্যোতি বোস জানান, আগামী বছরের জন্য শিল্পীর নাম উল্লেখ করে ব্যানারও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ঠিক কী কারণে সুশান্ত পাল এই পুজো থেকে সরে গেলেন, সে উত্তর শুধু তিনিই দিতে পারবেন। এখন বড় প্রশ্ন হল, তাহলে শততম বর্ষে টালা প্রত্যয়ের পরিকল্পনা কী? কোন শিল্পীর নাম যুক্ত হবে ক্লাবের সঙ্গে? ধ্রুবজ্যোতি বোসের কথায়, "শতবর্ষে আমাদের বড়সড় প্ল্যান রয়েছে। এতবড় মণ্ডপ সজ্জার জন্য বড়মাপের শিল্পীর কথাই ভাবা হচ্ছে। তবে এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।" সবমিলিয়ে টালা প্রত্যয়ের পুজোর ভবিষ্যৎ নিয়ে কৌতূহল বাড়ছে পুজোপ্রেমীদের।