নিরুফা খাতুন: বৃদ্ধ মাকে খুনের পর পালিয়ে বেড়াচ্ছিল ছেলে। অবশেষে পাটুলি থানায় এসে আত্মসমপর্ণ করল খুনি অভিষেক মৈত্র। টাকা পয়সা নিয়ে বিবাদের জেরে মাকে খুন করে বলে পুলিশের কাছে স্বাকীরোক্তি মৃতার ছেলের।

বিদ্যাসাগর কলোনির একটি ফ্ল্যাটে ছেলের সঙ্গে ভাড়া থাকতেন বছর বাহাত্তরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মালবিকা মৈত্র। বুধবার ফ্ল্যাট থেকে দগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয় তাঁর। কালো ধোঁয়া বেরতে দেখে আঁতকে ওঠেন স্থানীয়রা। সেই সময় বাইরে থেকে দরজায় তালা দেওয়া ছিল। খবর পেয়ে পাটুলি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। ঘটনার পর থেকে ওই বৃদ্ধার ব্যাঙ্ককর্মী ছেলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর ফোনও সুইচ অফ আসছিল। বৃদ্ধাকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল। ময়না তদন্তে রিপোর্টে তা স্পষ্ট হয়ে যায়। বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে ঘরে আগুন দিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এই নৃশংস হত্যা আর কেউ করেনি। বৃদ্ধার ছেলেই এই কাজ করেছে। এরপর থেকে মৃতার ছেলের খোঁজে হন্য হয়ে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। জানা গিয়েছে, মাকে খুনের পর কলকাতায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল অভিষেক। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে কখনও অলিগলিতে কখনও ফুটপাতে দিন কাটাচ্ছিল। কিন্তু একদিনে পকেটে যে টাকা ছিল সব শেষ হয়ে গিয়েছে। এদিকে পুলিশও খুনিকে নাগালে পেতে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয়। ফলে ব্যাঙ্ক থেকে টাকাও তুলতে পারছিল না।
টাকার টান পড়তেই রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ থানায় এসে হাজির হয় মৃতার ছেলে। নিজের দোষ কবুল করে আত্মসমপর্ণ করে। জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে, মায়ের সঙ্গে টাকা নিয়ে বিবাদ চলছিল। যা নিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিল। সেই মানসিক অবসাদ থেকে মাকে খুন করে। তবে পুলিশ অভিযুক্তের বয়ান যাচাই করে দেখছে। খুনের পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।