সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কৃষকদের এক বছরেরও বেশি সময়ের আন্দোলন স্বীকৃতি পেল। সংসদের দুই কক্ষেই পাশ হয়ে গেল কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল ২০২১। এরপর রাষ্ট্রপতি সই করলেই সরকারিভাবে বাতিল হয়ে যাবে কেন্দ্রের প্রস্তাবিত তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন (Farm Laws)। কিন্তু সংসদে সরকারিভাবে বিল প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলেও নিজেদের আন্দোলন প্রত্যাহার করছেন না কৃষকরা। কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত (Rakesh Tikait) জানিয়ে দিয়েছেন, সরকারি ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে আইন না আনা পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই। সরকারকে ফের কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে হবে, দাবি রাকেশ টিকায়েতের।
সোমবার প্রথমে লোকসভায় বিলটি পেশ হয়। বিরোধী শিবির বিলটি নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু সেই দাবি সরকার পক্ষ মানেনি। যার জেরে অধিকাংশ বিরোধী দল লোকসভা থেকে ওয়াক আউট করে। বিরোধীদের অনুপস্থিতিতে মাত্র ৪ মিনিটে ধ্বনিভোটে কৃষি আইন প্রত্যাহার বিলটি পাশ করিয়ে নেয় সরকার। লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও (Rajya Sabha) একইভাবে বিলটি পাশ করিয়ে নেয় সরকার পক্ষ।
[আরও পড়ুন: নজিরবিহীন! সংসদের বাদল অধিবেশনে হট্টগোলের জেরে শীতকালীন অধিবেশনে সাসপেন্ড ১২ সাংসদ]
কোনও আলোচনা ছাড়াই কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় রীতিমতো গোঁসা হয়েছে বিরোধী শিবিরের। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর (Adhir Chowdhury) বক্তব্য, সরকার ভয় পেয়েছে। সেকারণেই বিলটি নিয়ে বিরোধীদের বক্তব্য রাখতে দেওয়া হল না। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেও কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও সরকার যেভাবে বিরোধীদের আলোচনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করল, তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। খোদ রাহুল গান্ধীও (Rahul Gandhi) বিনা আলোচনায় কৃষি আইন প্রত্যাহারের বিরোধিতা করেছেন। আসলে, কৃষি আইন প্রত্যাহার বিলের যে বক্তব্য তাতে আপত্তি রয়েছে বিরোধীদের। কারণ, সরকারের পেশ করা বিলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিলটির প্রশংসা করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: Farm Laws: অনুপস্থিত কংগ্রেস-তৃণমূল, আলোচনা ছাড়াই সংসদে পাশ কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল]
যদিও তড়িঘড়ি বিল প্রত্যাহার করেও বিক্ষোভকারী কৃষকদের মন জিততে পারেনি সরকার। বিল প্রত্যাহারের পরও আন্দোলন জারি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত (Rakesh Tikait) জানিয়েছেন, “সরকার চায় দেশে কোনও আন্দোলনই না হোক। আমরা এমএসপি-সহ বাকি দাবিগুলি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে সরছি না।” সংযুক্ত কিষান মোর্চার তরফে জানানো হয়েছে, কৃষকদের বাতিল হওয়া সংসদ অভিযানও হবে। তবে, কবে হবে সেটা ৪ ডিসেম্বর বৈঠকের পর ঠিক করা হবে।