গৌতম ব্রহ্ম: অন্য়ের ধান নিজের বলে সরকারের কাছে বেঁচে দিয়ে লাভের গুড় খাচ্ছে এক শ্রেণির দালাল! এমন অভিযোগ নবান্নে জমা পড়ছে। এবার তাই ধানসংগ্রহের ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা আনতে ই-পস যন্ত্র কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। আগামী জুন মাস থেকেই ব্লক লেবেলে থাকা সেন্ট্রালাইজড প্রকিওরমেন্ট সেন্টারে (সিপিসি) এই অত্যাধুনিক যন্ত্র বসানো হবে। যার মাধ্যমে সহজেই ধরা যাবে কারচুপি। নবান্ন সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
আসলে চলতি বছরে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার দাবি মেনে ধান সংগ্রহের মূল্য বাড়িয়েছে কেন্দ্র। কুইন্টাল পিছু ১৯৪০ টাকা থেকে বেড়ে ২০৪০ টাকা করা হয়েছে দর। কিন্তু পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে, বহু দালাল ছোট চাষীদের থেকে সস্তায় ধান কিনে তা সরকারের ঘরে বিক্রি করছে। নবান্নের এক আধিকারিক জানালেন, আসলে অনেক চাষী সিপিসি-তে ধান বিক্রির নিয়ম জানেন না। ধানের পরিমান কম হলে গোলা থেকে সিপিসি পর্যন্ত নিয়ে যেতে পরিবহন ব্যয়ও অনেক বেশি পড়ে যায়। এই সব ঝামেলা এড়াতে অনেকেই দালালের কাছে কম দামে ধান বেঁচে দেন। আর কৃষকের ছদ্মবেশে তা বিক্রি করে লাভের গুড় খেয়ে নেয় দালাল।
[আরও পড়ুন: ১৫ টাকায় বিকোচ্ছে প্রতি কিলো তরমুজ! চাষের খরচ উঠবে? দুশ্চিন্তায় কৃষকরা ]
নবান্ন সূত্রের খবর, আজ, বৃহস্পতিবার কৃষি ও খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের কর্তারা কৃষকবন্ধু পোর্টাল নিয়ে বৈঠক করবেন। সেখানেই ই-পস যন্ত্র নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের মন্ত্রী রথীন ঘোষ জানিয়েছেন, রাজ্যের কৃষকবন্ধু পোর্টালের তথ্য ব্যবহার করে রায়ত এবং ভাগচাষীদের জমির পরিমাণ মিলিয়ে ধান কেনার ব্যবস্থা হচ্ছে। অর্থাৎ যার যেমন জমির পরিমাণ সেই অনুপাতে তিনি ধান বিক্রি করতে পারবেন। অন্যের ধান নিজের বলে চালিয়ে দেওয়ার কারচুপি এবার আর চলবে না। রথীনবাবু আরও জানিয়েছেন, বোরো মরশুমের মধ্যে আধার সংযোগের কাজ শেষ হয়ে যাবে। জুন থেকে সিপিসি-তে ই-পস বা ‘ইলেকট্রনিক-পয়েন্ট অফ সেলস মেশিন’ বসবে। যার মাধ্যমে চাষী ও তার জমির সমস্ত বিবরণ স্পষ্ট হবে। মন্ত্রী আরও জানান, ইতিমধ্যেই ৪৯.২২ লক্ষ মেট্রিক টন ধান সংগৃহীত হয়েছে। আরো ১০ লক্ষ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। উল্লেখ্য, কৃষকবন্ধুর অনুদানের আশায় রাজ্যে হঠাৎ করেই কৃষকের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। সেই বেনোজল রুখতে ইতিমধ্যেই কৃষকদের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার লিংক করেছে রাজ্য। এবার ধান বিক্রিতেও স্বচ্ছতা বাড়ানোয় জোর দিল নবান্ন।