shono
Advertisement

এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়ে দ্বিগুণ! চাওড়া হাসি মালদহের আলু চাষিদের মুখে

কী বলছেন ব্যবসায়ীরা?
Posted: 03:13 PM Apr 13, 2023Updated: 03:13 PM Apr 13, 2023

বাবুল হক, মালদহ: হঠাৎ আলুর দর বৃদ্ধি। খোলা বাজারে সাতদিন আগেও আলু মিলেছে সাত টাকা কেজি দরে। এক ধাক্কায় দাম বেড়ে হয়েছে ১৬ টাকা। এক লাফে দ্বিগুণ! এ তো গেল মালদহের আলুর এদিনের খুচরো বাজার দর। দাম আরও বাড়বে। এমনটাই জানিয়ে দিয়েছেন পাইকাররা। আর এতেই এখন মুখে চওড়া হাসি মালদহের আলু চাষিদের।

Advertisement

গাজোলের আলমপুর হাটে আলুর দর না পেয়ে দিন কয়েক আগেই ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছিল আলু চাষি গণেশ বর্মনকে। সেদিন চাষিদের কাছ থেকে মাত্র প্রায় ৫৫০ টাকা প্রতি কুইন্ট্যাল দরে আলু কিনছিলেন পাইকাররা। কয়েকদিনের ব্যবধানে ১১০০ টাকা কুইন্ট্যাল দরে আলু কিনছেন তাঁরাই। দ্বিগুণ ধরে বিক্রি করে বেজায় খুশি গণেশ বর্মন। তাঁর কথায়, “গোটা মালদহ জেলায় আলুর ফলন খুব ভাল হয়েছে। জমিতেই আলু পচে নষ্ট হচ্ছিল। হিমঘরে আলু মজুত রাখার জন্য বন্ড পাওয়া যাচ্ছিল না। ৩০০-৪০০ টাকা কুইন্ট্যাল দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছিলাম। চরম লোকসান হচ্ছিল। এখন দু’-তিন থেকে আলুর দর একলাফে বেড়ে গিয়েছে। চাষিরা অন্তত লাভবান হবেন। আমরা সবাই খুশি।”

[আরও পড়ুন: কাঁঠালকে বিভিন্ন পোকা থেকে দূরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ, জেনে নিন প্রতিকারের উপায়]

হঠাৎ কেন মালদহে উর্ধ্বমুখী হয়ে উঠল আলুর দর? সৌজন্যে নাকি দক্ষিণবঙ্গ। ওল্ড মালদহের আটমাইল হাটে বড় লরি থেকে পিকআপ ভ্যানে বোঝাই করা হচ্ছে বস্তা বস্তা আলু। পিকআপ ভ্যানে আলু বোঝাই করার কাজ চলছে জমিতেই। খোশমেজাজেই কাজে ব্যস্ত আলু চাষিরা। এই আলু কোথায় যাবে? ওল্ড মালদহের মাঝরা অঞ্চলের আলু চাষি রবি মণ্ডল বলেন, “পাইকার কিনে নিয়েছেন। ১১৫০ টাকা কুইন্টাল দরে। মালদহ থেকে সোজা চলে যাবে বর্ধমান জেলায়। বড় লরিগুলি যাবে বাঁকুড়ায়। সেখান থেকে কলকাতায়।” রহস্যটা জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। গাজোলের আলমপুরের আলুর পাইকাররা জানান, এবার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আলুর ফলন ভাল হয়নি। বর্ধমান, বাঁকুড়ায় রোগে আলু নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের চাহিদা মেটাতে এবার উত্তরবঙ্গের মালদহ থেকে আলু পাঠানো হচ্ছে।” বর্ধমান, বাঁকুড়া, এমনকী কলকাতা থেকেও আলুর প্রচুর বরাত আসতে শুরু করেছে মালদহে। দক্ষিণবঙ্গের চাহিদা মেটাতে গিয়ে আরও দামি হতে পারে মালদহের আলু। সেই সঙ্গে গোটা রাজ্যেই এই মরশুমে আলুর দর আরও উর্ধ্বমুখী হতে পারে বলে জেলা বণিকসভার কর্তারা আশঙ্কা করছেন।

আমের জেলা মালদহে আলু উৎপাদন ভালই হয়। সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয়ে থাকে গাজোল ও ওল্ড মালদহ ব্লকে। এই দু’টি ব্লকে প্রচুর পরিমাণে আলু উৎপাদন হয়। এবারও ভাল উৎপাদন হয়েছে। ফলন বেশি হওয়ায় জমি থেকে আলু তোলার সময় দাম মিলছিল না। মাথায় হাত পড়েছিল চাষিদের। হিমঘরে গিয়ে আলুর বন্ড না পেয়ে হতাশ হচ্ছিলেন চাষিরা। ক্ষোভ থেকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। মালদহ জেলা কৃষি বিপণন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ১০ হাজার ১১৬ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। এবার প্রতি হেক্টর জমি থেকে ৩০ মেট্রিক টন আলু ফলন হয়েছে। মালদহ জেলা কৃষি দপ্তরের অধিকর্তা দেবনাথ মজুমদার বলেন, “চাহিদার তুলনায় আলুর যোগান এবার অনেকটাই বেশি। সরকার সহায়ক মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে আলু কেনার বিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর। কৃষকদের পাশে সরকার রয়েছে। এরই মধ্যে মালদহের উৎপাদিত আলু দক্ষিণবঙ্গে রফতানি শুরু হয়েছে। চাষিদের কাছে এটি সুখবর।” মালদহের হিমঘর মালিক সমিতির সভাপতি উজ্জ্বল সাহা বলেন, “এখন আর হিমঘরেও চাপ নেই। আলুর বন্ড সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আলুর ধ্বসা রোগ দেখা দিয়েছিল। তাই বাংলা জুড়ে বাঙালির চাহিদা মেটাবে মালদহের আলু।”

[আরও পড়ুন: বাজারে চাহিদা নাসিকের পিঁয়াজের! দেশি আনাজের দাম না মেলায় মাথায় হাত চাষিদের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement