সম্যক খান, মেদিনীপুর: লাল ও শ্বেত চন্দনের চাষ হবে এবার দক্ষিণবঙ্গেও। এজন্য জঙ্গলমহলের দুই জেলাতেই কয়েক হাজার চারা তৈরি করা হবে। বনবান্ধব উৎসবের সূচনায় মেদিনীপুর এসে এমনই প্রতিশ্রুতি দেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। হাজির ছিলেন মন্ত্রী মানস ভুঁইঞা, বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, বিধায়ক অজিত মাইতি, দীনেন রায়, জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরী, পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার থেকে শুরু করে বনদপ্তরের আধিকারিকরা।
একইসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরে বেআইনিভাবে গাছ কাটার একাধিক ঘটনা নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করেন বনমন্ত্রী। জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে তা রুখতে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। জঙ্গলে গাছ কাটা, আগুন লাগানো রুখতে খুব শীঘ্রই বিধানসভায় কঠিন আইন আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি হাতির হানা রুখতে এবার সেফ করিডর করারও পরিকল্পনা রাজ্য সরকার গ্রহণ করছে বলেও মন্তব্য তাঁর।
[আরও পড়ুন: মালদহের বাজার কাঁপাচ্ছে ‘থাই আপেল কুল’, লাভের অঙ্কে মুখে হাসি কৃষকদের]
জঙ্গলমহলে অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটাতে চায় রাজ্য সরকার। লাল ও শ্বেত চন্দনের গুরুত্ব অপরিসীম। অর্থনৈতিক দিক থেকেও এর দাম আকাশছোঁয়া। পরিকল্পনা ঠিকঠাক এগোলে বদলে যেতে পারে জঙ্গলমহলের গ্রামীণ অর্থনীতি। সেই উদ্দেশ্যেই বনমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার জঙ্গলে লাল ও শ্বেত চন্দন লাগানো হবে। এজন্য পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে ৪০ হাজারেরও বেশী চারাগাছ লাগানো হবে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে শ্বেত চন্দন ১৫ হাজার ও লাল চন্দন ১০ হাজার চারা এবং ঝাড়গ্রামে যথাক্রমে ৬ হাজার ও ১০ হাজার চারা তৈরির পরিকল্পনা আছে। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিকে নিয়ে মেদিনীপুরের গোপগড় ইকোপার্কে বনবান্ধব উৎসব পালিত হয়। উৎসব মঞ্চ থেকে বিভিন্ন সরকারী পরিষেবাও প্রদান করা হয়। প্রায় সাড়ে ৪২ কোটি টাকা লভ্যাংশ তুলে দেওয়া হয় বন সুরক্ষা কমিটিগুলির হাতে।
বর্তমানে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে হাতির তাণ্ডব ক্রমশ বাড়ছে। আবার হাতিকে উত্যক্ত করার ঘটনাও বাড়ছে। তাই উত্তরবঙ্গের ন্যায় এবার দক্ষিণবঙ্গেও করিডর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলাতে। এর জন্য কেন্দ্র ৪০ শতাংশ ও রাজ্য ৬০ শতাংশ ব্যয়ভার বহন করবে। পাশাপাশি দলছুট বেয়াদপ হাতিগুলি যারা প্রকাশ্য দিবালোকে লোকালয়ে ঢুকে তাণ্ডব করে, অনেক সময় তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না বনদপ্তর। এরকম হাতিগুলিকে ট্রাঙ্কুলাইজার করে ঝাড়গ্রামের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সংশোধনাগারের ন্যয় রাখার ব্যবস্থা করা হবে।