সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের যুদ্ধবন্দি পাইলটকে ছেড়ে দিক পাকিস্তান। ইমরান সরকারকে এমনই পরামর্শ দিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ভাইঝি ফাতিমা। নিউ ইয়র্ক টাইমসে লেখা একটি প্রতিবেদনে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘আমি এবং আমার দেশের তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশই চায়, যুদ্ধবন্দি ভারতীয় পাইলটকে দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হোক। এটা দু দেশের সৌজন্য, মানবিকতা এবং শান্তির ব্যাপার।’
যুদ্ধের আশঙ্কায় দেশের সমস্ত বিমানবন্দর বন্ধ করল সন্ত্রস্ত পাকিস্তান
বুধবার ভারতের আকাশসীমায় ঢুকে পড়া পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানের মোকাবিলায় পালটা জবাব দেয় ভারতীয় বিমান। দেশের সুরক্ষার স্বার্থে শত্রুপক্ষের বিমান হানা রুখতে গিয়ে অভিনন্দন বর্তমান নামে এক উইং কমান্ডারের নিখোঁজ হওয়ার কথা জানায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সাংবাদিকদের সামনে বিবৃতি দিয়ে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার জানিয়েছিলেন, একটি F-16 পাক যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা হয়েছে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে লড়াইয়ে নষ্ট হয়েছে বায়ুসেনার একটি MIG-21 বাইসন বিমান। তার চালক ‘মিসিং ইন অ্যাকশন’ বা লড়াইয়ের পর থেকেই নিখোঁজ। পরে অবশ্য পাক সেনার মুখপাত্র আসিফ গফুর দাবি করেন, ভারতের উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান আহত অবস্থায় তাঁদের সেনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দাবির স্বপক্ষে পোস্ট এবং ভিডিও প্রকাশ করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এরপরই জেনেভা চুক্তি অনুযায়ী, অভিনন্দনকে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জোরদার সওয়াল করে ভারত। এক্ষেত্রে সরকারের পাশে ছিলেন সব বিরোধীরাও। খবর নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পরই নিজের বক্তব্য পেশ করেছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলি ভুট্টোর নাতনি ফাতিমা। নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিশেষ প্রতিবেদনে ফাতিমা লিখেছেন, ‘আমরা জীবনের একটা বড় অংশই যুদ্ধের মধ্যে কাটিয়েছি। আমি চাই না, কোনও পাক সেনার মৃত্যু হোক। যেমন চাই না কোনও ভারতীয় সেনাও প্রাণ হারান। এই উপমহাদেশে আমরা আর কেউ অসহায় হতে চাই না।’
শত্রুর কবলেও অদম্য অভিনন্দন, দৃপ্ত কণ্ঠে জবাব দিলেন পাকিস্তানিদের
তিনি আরও লিখেছেন, ‘পাকিস্তানে আমাদের প্রজন্মের অন্য লড়াই আছে। বাক স্বাধীনতা, শান্তিস্থাপনের স্বার্থে একযোগে সুর চড়ানো। দেশে সেনা শাসনের দীর্ঘ ইতিহাস থেকে আমরা শিখেছি, যুদ্ধ বাঁধাতে কিম্বা রণহুঙ্কার দিতে আমাদের কোনও উৎসাহ বা খিদে নেই।’ বছর ছত্রিশের ফাতিমা নিউ ইয়র্ক টাইমসের ‘ওপিনিয়ন’ বিভাগে নিয়মিত কলাম লেখেন। এমনকী তাতে একসময়ে নিজের পিসি বেনজির ভুট্টোর বিরোধিতাও করেছিলেন ফতিমা। এবার তাঁর লেখা – ‘হ্যাশট্যাগস ফর ওয়ার বিটুইন ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান’ শীর্ষক কলামে নিজের মত একেবারে স্পষ্টভাবেই প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্মের এই বিশিষ্ট প্রতিনিধি। লেখার পরতে পরতে পাক প্রশাসনের কড়া সমালোচনাও আছে। পুলওয়ামা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে উত্তেজনার পারদ চড়ছে, তা নিয়ে রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করেছেন ভুট্টো পরিবারের উত্তরসূরী। তাঁর কথায়, ‘আগে কখনও পাকিস্তানকে দেখিনি প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে। কিন্তু এও দেখিনি যে পারমাণবিক শক্তিধর দুটি দেশের মধ্যে টুইটারেই যুদ্ধ বেঁধে যাচ্ছে।’ ইমরান সরকারের কাছে ফাতিমার আবেদন, সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা হোক। প্রতিবেশী দেশের প্রতি স্বাভাবিক সৌজন্য বজায় রাখার স্বার্থেই দ্রুত, যথাযথ সম্মানের সঙ্গে ফিরিয়ে দেওয়া হোক ধৃত ভারতীয় পাইলটকে। ফলে ভারতের পাশাপাশি অভ্যন্তরেও উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে ফেরানোর চাপ বাড়ছে পাক প্রশাসনের উপর।
The post স্বদেশেও চাপ বাড়ছে ইমরানের, অভিনন্দনকে ফেরানোর দাবি ফাতিমা ভুট্টোর appeared first on Sangbad Pratidin.