অর্ণব দাস, বারাকপুর: কালীপুজো (Kali Puja) মানেই বারাসত। আলোয় আলোয় সেজে ওঠে চারপাশ। কিন্তু শ্যামার আরাধনায় খামতি থাকে না নৈহাটিতেও।আর নৈহাটির শ্যামাপুজো মানেই অরবিন্দ রোডের বড় কালী অর্থাৎ বড়মার পুজো। এই পুজোর উদ্বোধনের মাধ্যমেই কালী আরাধনা শুরু হয় নৈহাটিতে। বড়মার পরই বিসর্জন হয় অন্য প্রতিমার।স্থানীয়দের বিশ্বাস বড়মা খুবই জাগ্রত। মায়ের কাছে কোনও কিছু চাইলে ভক্তের মনস্কামনা পূর্ণ হয়। তাই মায়ের আশীর্বাদ পেতে প্রতিবছর ভক্তের ঢল নামে। তবে করোনা কারণে চলতি বছরে জমায়েতে জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা, সেই জন্য ভারচুয়ালি অঞ্জলির ব্যবস্থা করল উদ্যোক্তারা। অর্থাৎ বাড়িতে বসেই বড়মাকে অঞ্জলি দিতে পারবেন সকলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় একশো বছর আগে বড়মার পুজো শুরু করেন ভবেশ চক্রবর্তী। প্রথমে এই পুজো বড়কালী নামে প্রচলিত ছিল।পরবর্তীতে ভক্তদের মুখে মুখেই ‘বড়মা’ হিসেবেই পরিচিতি লাভ করে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতি বছর ভক্তরা বড়মার টানে পুজোর দিন নৈহাটিতে ভিড় জমান। যদিও এবছর করোনা বিধি মেনেই বড়মার পুজো করা হচ্ছে। বড়মা পুজো আয়োজক কমিটির সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য বলেন, “করোনার কারণে এবছর মণ্ডপে গিয়ে অঞ্জলি দেওয়া যাবে না। তবে ভক্তরা বাড়িতে বসেই পুজো কমিটির ফেসবুক এবং ইউটিউবের মাধ্যমে ভারচুয়ালি পুজো ও অঞ্জলি দিতে পারবেন।”
[আরও পড়ুন : একই সিরিঞ্জ দিয়ে একাধিক ব্যক্তিকে করোনার টিকা, চার কর্মীকে শোকজ স্বাস্থ্যদপ্তরের]
এর পাশাপাশি নৈহাটিতে জমকালো থিমের পুজোও হয়। এই থিম পুজো গুলির মধ্যে অন্যতম ৬ নম্বর বিজয় নগরের ‘নিউ স্টার ক্লাবে’র পুজো। এবারের ৫৫তম বছরের এই পুজোর থিম ‘কাঁটাতার’। করোনাবিধি মেনে পুজো করার পাশাপাশি দর্শনার্থীদের জন্য কোভিড টিকারও ব্যবস্থা করেছে এই পুজো কমিটির কর্মকর্তারা। পুজো কমিটির উদ্যোক্তা সনৎ দে বলেন, “এই থিমের মাধ্যমে আমরা বোঝাতে চেয়েছি পঞ্চাশ বছর পরেও ওপার বাংলার মায়েরা এপারে এনআরসি নামক আতঙ্কের জন্য কাঁদছে।” নৈহাটি থানার সংলগ্ন আরেকটি কালীপুজো হল লোহাঘাট পার্ক অ্যাসোসিয়েশনের পুজো।
পুজো কমিটির উদ্যোক্তা পার্থ জানান, “এবারের ৬১তম বছরের কালীপুজোর থিমে আন্দামানের জারোয়া সম্প্রদায় মানুষের জীবনযাত্রা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।” নৈহাটির ৭নম্বর বিজয় নগর অধিবাসী বৃন্দ কাঠগোলা পুজো কমিটির এবার থিম ‘ডোকরা শিল্পের আদলে গ্রাম বাংলার উৎসব’। পুজো কমিটির সদস্য অমল মিত্র বলেন, “এবারের আমাদের ৭১তম বছরের পুজো কোভিড বিধি মেনেই করা হচ্ছে। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই মাতৃ প্রতিমা তৈরী হয়েছে।”