সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে কিছুতেই থামছে না আমেরিকা (US) ও চিনের (China) সংঘাত। আন্তর্জাতিক জলসীমায় আগ্রাসনের অভিযোগে এবার বেজিংকে সমুদ্রের ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ বলে কটাক্ষ করলেন মার্কিন সহকারী বিদেশসচিব ডেভিড স্টিলওয়েল। এর একদিন আগেই দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের সমস্ত দাবি খারিজ করে দেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও।
[আরও পড়ুন: তালিবানের শর্ত মেনে আফগানিস্তানে ৫টি সেনাঘাঁটি বন্ধ করল আমেরিকা]
মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে একটি অনুষ্ঠানে চিনা সংস্থাগুলিকে নিশান করে স্টিলওয়েল বলেন, “বাণিজ্যিক সংস্থা ও বিদেশি শক্তির হাতিয়ারগুলির মধ্যে তফাত কোথায়, তা জানার অধিকার রয়েছে আমাদের সমাজের প্রত্যেক নাগরিকের।” ‘Center for Strategic and International Studies’-এ পূর্ব-এশিয়ায় পম্পেওর শীর্ষ সহযোগী স্টিলওয়েল জানান, দক্ষিণ চিন সাগরে তেলের কুয়ো খনন করে বা মাছ ধরার নৌকা পাঠিয়ে বেজিং অন্য দেশগুলিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। সীমা সম্প্রসারণে সরকারি সংস্থাগুলিকে হাতিয়ার করেছে কমিউনিস্ট দেশটি। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “চিনের সরকারি সংস্থাগুলি আধুনিক যুগের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। তাদের উদ্দেশ্য বাণিজ্যের নামে আগ্রাসন চালানো।”
ভারতে বাণিজ্যও করতে এসে কীভাবে গোটা দেশের দখল নিজের হাতে নিয়ে নেয় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, তা সবার জানা। একইভাবে দক্ষিণ চিন সাগরেও একাধিক বিতর্কিত দ্বীপে বাণিজ্যও ও প্রতিরক্ষার নামে সামরিক পরিকাঠামো তৈরি করেছে চিন। কৃত্রিম দ্বীপ বানিয়ে সেগুলিতে দৈত্যাকৃতির অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট গান, ক্লোজ ইন উইপন সিস্টেম মোতায়েন করেছে লালফৌজ। ওই দ্বীপগুলিতে সর্বক্ষণ মোতায়েন রয়েছে ফাইটার জেট, অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট মিসাইল, সারফেস টু এয়ার মিসাইল৷ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গড়ে তোলার ছলে আস্ত একটি ‘সারফেস টু এয়ার মিসাইল’ প্ল্যাটফর্ম বা ‘এসএএম’ গড়ে ফেলেছে বেজিং৷ ভবিষ্যতে যে কোনও মুহূর্তে চিন হামলা চালাতে পারে বলেও চূড়ান্ত আশঙ্কায় পেন্টাগন৷
উল্লেখ্য, লাদাখ ছাড়াও চিনের আরও ২০টি ফ্রন্টে সংঘাত চলছে। রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত পাহারা দিতে তাদের বেশিরভাগ সেনা মোতায়েন রয়েছে। স্বশাসিত জিংজিয়াং প্রদেশে উইঘুর বিদ্রোহীদের সামলাতে প্রতিদিন নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে চিনা বাহিনীর একটি বড় অংশকে। মঙ্গোলিয়া, তাজাকিস্তান, কিরঘিজস্তান, কাজাখস্তান, লাওস, কম্বোডিয়া, কোরিয়া, এমনকী, নেপাল, ভুটান-সহ সব প্রতিবেশীর সঙ্গে চিনের ভূখণ্ড নিয়ে ঝামেলা। দক্ষিণ চিন সাগরে আধিপত্য নিয়েও চিনের লড়াই সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, জাপান এবং সুদূর ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গেও। তাদের ভূখণ্ড থেকে দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার একটি দ্বীপেও মাছ ধরার অধিকার চাইছে চিন। তাদের বক্তব্য, শত শত বছর আগে থেকেই দক্ষিণ চিন সাগরের ওই দ্বীপটির অধিকার তাদের। চারপাশের সব ভূখণ্ড ও জলপথ একসময় তাদের ছিল– দাবি জানিয়ে চিনের এই ‘বিস্তারবাদী’ মনোভাবের বিরুদ্ধে এখন এতগুলি দেশ। এহেন সময়ে আমেরিকার চাপে কিছুটা ব্যাকফুটে চিন বলেই মত বিশ্লেষকদের।
[আরও পড়ুন: আশার আলো! ‘করোনা ভ্যাকসিনে’র প্রথম পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সফল, দাবি মার্কিন সংস্থার]
The post সমুদ্রের ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’, আগ্রাসী চিনকে কটাক্ষ মার্কিন আমলার appeared first on Sangbad Pratidin.