সংবাদ প্রতিদি ডিজিটাল ডেস্ক: ‘অ্যান্ড দ্য অ্যাওয়ার্ড গোজ টু…৷’ এতটা বলেই থামলেন ঘোষক৷ এই রে, পুরস্কার প্রাপকের নামই যে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! ব্যাপারটা কী? কার হাতে উঠছে বিশ্বকাপের সোনার বুট? ঘোষক তো বুঝেই পাচ্ছেন না, যে নামটি তিনি পড়বেন তিনি আসলে কে? কারণ তাঁর কাছে যে তালিকা রয়েছে, সেখানে মোটা অক্ষরে লেখা বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ‘আত্মঘাতী’ গোল হয়েছে৷
উপরের সব চরিত্র কাল্পনিক৷ তবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না৷ কারণ চলতি বিশ্বকাপে যে পরিমাণ আত্মঘাতী গোল হয়েছে, তা থেকে অনেকখানি পিছিয়ে সব তারকাই৷ ব্রাজিল বনাম বেলজিয়াম ম্যাচের পর এখনও পর্যন্ত এ বিশ্বকাপে ১১টি আত্মঘাতী গোলের সাক্ষী থেকেছে এবারের বিশ্বকাপ৷ সেম-সাইড গোলেও এবার নয়া ইতিহাস গড়েছে এই টুর্নামেন্ট৷ ১৯৯৮ সালে ছ’টি আত্মঘাতী গোল হয়েছিল৷ ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে সংখ্যাটা ছিল পাঁচ৷ কিন্তু এবার টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার আগেই ১১টি গোলের পাশে ‘আত্মঘাতী’ লেখা হয়ে গিয়েছে৷ আর এই গোলগুলিই সেই দেশগুলির জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ এমনকী এই মারাত্মক ভুল সেই দলকেও বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দিয়েছে৷ ঠিক যেমন হল শুক্রবার কাজান এরিনায়৷ মার্সেলোর পর দ্বিতীয় ব্রাজিলীয় তারকা হিসেবে বিশ্বকাপের মঞ্চে আত্মঘাতী গোল করেন ফার্নান্দিনহো৷ আর এতেই বেলজিয়ামের কাছে হার নিশ্চিত হয়ে যায় পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের৷ চলুন একবার অ্যাকশন রি-প্লেতে দেখে নেওয়া যাক এবারের বিশ্বকাপে ব্রাজিল ছাড়া বাকি কোন দশটি দলের কারা আত্মঘাতী গোল করেছিলেন৷
[দুনিয়া কাঁপাচ্ছে ইউরোপের পাওয়ার ফুটবল, ফের প্রমাণিত রাশিয়া বিশ্বকাপে]
১. মরক্কোর আজিজ বউহাদৌজের একমাত্র আত্মঘাতী গোলে ২০ বছর পর বিশ্বকাপের কোনও ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেছিল ইরান৷
২. ফ্রান্সের বিরুদ্ধে একই ভুল করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার আজিজ বেহিচ৷ সে ম্যাচে অজিবাহিনী হারে ১-২ ব্যবধানে৷
৩. নাইজেরিয়ান ওঘেনেকারো এটেবোর একটা ভুল বিশ্বকাপে দলের স্বপ্নভঙ্গ করল৷ তাঁর আত্মঘাতী গোলেই ক্রোয়েশিয়ার কাছে ০-২ গোলে হারে সুপার ইগলস৷
৪. ধারে ও ভারে এগিয়ে থাকা পোল্যান্ড যে গ্রুপ পর্বে সেনেগালের কাছে পরাস্ত হবে, তেমনটা অনেকেই ভাবেননি৷ থিয়াগো সিওনেকের আত্মঘাতী গোলই সব হিসেব-নিকেশ পালটে দিল৷
৫. ৩২ বছর পর বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করেছিল মিশর৷ মহম্মদ সালাহর খেলা দেখতে মুখিয়ে ছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা৷ কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে জয়ের কোনও চিহ্ন রেখে যেতে পারল না মিশর৷ আহমেদ ফ্যাতির আত্মঘাতী গোলে সে ম্যাচে রাশিয়ার কাছে ১-৩ গোলে হারেন সালাহরা৷
৬. উরুগুয়ের মতো কঠিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াইয়ে বেশ চাপেই ছিলেন রুশরা৷ আর সেই কারণেই চাপের মুখে আত্মঘাতী গোল করেন ডেনিস চেরিশেভ৷ সুয়ারেজরা সে ম্যাচ জেতেন ৩-০ গোলে৷ যদিও স্বস্তির
বিষয়, এ হারের জন্য বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যেতে হয়নি রাশিয়াকে৷
৭. কোস্টারিকার ইয়ান সমার্সের আত্মঘাতী গোলের জন্য সুইজারল্যান্ড সে ম্যাচে ২-২ ড্র করে৷
৮. মেক্সিকান এডসন অ্যালভারেজের গোলে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে ৩-০ গোলে জিতে যায় সুইডেন৷
৯. পানামার বিরুদ্ধে আত্মঘাতী গোল করেন তিউনিশিয়ার ইয়াসেন মেরিয়াহর৷ যদিও সৌভাগ্যক্রমে সে ম্যাচ জিতে যায় তিউনিশিয়াই৷
১০. স্পেন-রাশিয়া ম্যাচে রাশিয়ার সের্গেই ইগনাশেভিচ আত্মঘাতী গোল করেছিলেন৷ তা সত্ত্বেও টাইব্রেকারে পরই ছিটকে গিয়েছিল স্পেন৷
[সাক্ষী-জিভাকে নিয়ে জন্মদিনের সেলিব্রেশনে ধোনি, সঙ্গী বিরাট-অনুষ্কা]
বিশ্বকাপে এই আত্মঘাতী গোল অনেকটা ভোটের নোটা (None of the Above) পদ্ধতির মতোই৷ যতই ভোট পড়ুক না কেন, জিতবে সেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলটিই৷ ঠিক যেভাবে সোনার বুট নিয়ে কোনও এক গোলদাতাই৷ তবে উপরের কল্পনা বাস্তবায়িত না হলেও ঘোষণা মঞ্চে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে ‘আত্মঘাতী’র নাম তো উল্লেখ করা যেতেই পারে৷ তাই না?
The post বিশ্বকাপে রেকর্ড আত্মঘাতী গোলের, তবু অধরা সোনার বুট… appeared first on Sangbad Pratidin.