মরক্কো: ০
স্পেন: ০
পেনাল্টি শুটআউটে জয়ী মরক্কো (৩-০)
দুলাল দে, দোহা: গ্রুপ পর্বে কোস্টারিকাকে ৭ গোলের মালা পরিয়ে বিশ্বকাপের শুরুতেই গর্জে উঠেছিল স্পেন। এনরিকের ছেলেরা বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, কাতারে তাঁরাও অন্যতম ফেভারিট। কিন্তু অঘটন ঘটিয়ে তো চমক দিয়েছিল মরক্কোও। বেলজিয়ামকে হারানো থেকে ক্রোয়েশিয়ার মতো শক্তিশালী দলকে পিছনে ফেলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নকআউট নিশ্চিত করেছিল তারা। তাই বড় দলের বিরুদ্ধে তারা যে তুলনামূলক দুর্বল, এমনটা বলার সাহস পাননি বিশ্লেষকরাও। আর সেই কারণেই জমে উঠেছিল প্রি-কোয়ার্টারের লড়াই। স্পেনের বিরুদ্ধেও যে চোখে চোখ রেখে লড়াই করা যায়, এবং জেতা যায়, সেটাই প্রমাণ করল অ্যাটলাস সিংহরা। প্রথমবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছনোর নজির গড়ল তারা।
টুর্নামেন্টের গোড়াতেই ছিটকে গিয়েছে জার্মানি, উরুগুয়ের মতো হেভিওয়েট দলগুলি। শেষ ম্যাচে জাপানের কাছে পরাস্ত হয় স্পেনও। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের কি টক্কর দিয়ে ফের নয়া ইতিহাস রচনা করবে মরক্কো? খেলা দেখতে দেখতে বারবারই প্রশ্নটা মনের কোণে উঁকি মারছিল। কারণ প্রথম থেকে বল পজেশনে স্পেন এগিয়ে ছিল ঠিকই। কিন্তু স্প্যানিশ আর্মাডা তছনছ করতে একাধিকবার তাদের ডেরায় হারা দেন মরক্কান স্ট্রাইকাররা। কখনও ফ্রি-কিক থেকে গোলের সুযোগ তৈরি করেন হাকিমি তো তখনও অল্পের জন্য গোল মিস করেন নায়েফ। সেখানে একবারই মরক্কান রক্ষণ পেরিয়ে গোল করার সুযোগ পান অ্যাসেনসিও। কিন্তু গোলমুখ খোলেনি।
[আরও পড়ুন: মাঠে ‘স্পোর্টস ব্রা’ পরে নেমেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবলার! ব্যাপারটা কী?]
দ্বিতীয়ার্ধেও একই ছন্দে ধরা দেয় মরক্কো। তবে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ান জর্ডি আলবারাও। কিন্তু বার বার লক্ষ্য করা যায় ফিনিশিংয়ের অভাব। সেয়ানে-সেয়ানে টক্কর দিয়ে নিজেদের গড় সামলান দুই পক্ষের গোলকিপার। নির্ধারিত সময়েই যেখানে বেশ কয়েকটা গোল নিশ্চিত ভাবে হতে পারত, সেখান থেকে তাঁদের দৌলতেই গোলশূন্য ভাবে ম্যাচ গড়ায় এক্সট্রা টাইমে।
সোম-রাতে জান-প্রাণ দিয়ে গতবারের রানার্স আপ ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে দেখা গিয়েছিল এশীয় জায়ান্ট জাপানকে। চলতি বিশ্বকাপে টিকে থাকা একমাত্র আফ্রিকান দেশ হিসেবে অস্তিত্ব রক্ষার মরিয়া প্রয়াস করে মরক্কোও। এক্সট্রা টাইমের প্রথমার্ধে ডেডলক ভাঙার দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েছিলেন ওয়ালিদ চেদিরা। কিন্তু সিমনের গ্লাভস রক্ষা করে সেই প্রয়াস। দ্বিতীয়ার্ধেও বদলায়নি খেলার ফল। ভাগ্য নির্ধারিত হল পেনাল্টি শুটআউটে।
চার বছর আগে গ্রুপ পর্যায়ে মরক্কোর মুখোমুখি হয়েছিল স্পেন। সেই ম্যাচে অ্যাটলাস সিংহদের বশ মানাতে পারেনি লা রোজা। ম্যাচ শেষ হয়েছিল ২-২ গোলে। এবারও পারল না। এবারের মতো এখানেই শেষ এনরিকে অ্যান্ড কোংয়ের বিশ্বকাপ সফর।