আকাশ মিশ্র: নারীকেন্দ্রিক সিনেমা বা সিরিজের সংখ্যা এমনিতেও বলিউডে খুবই কম। তবুও দুএকটা যা হয়েছে, সেসবের গল্পে মূলত, পুরুষতন্ত্রকে সমালোচনা করে নারীর জয়গান থাকে। তবে সদ্য় নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া 'দো পত্তি' কিন্তু একেবারেই অন্য পথে হাঁটে। এই সিনেমার গল্প নারীকেন্দ্রিক হয়েও, একেবারেই নারী স্বাধীনতা নিয়ে তৎপর নয়। বরং ক্রাইম থ্রিলার এবং ধাঁধার ছক দিয়ে বেঁধে 'দো পত্তি'র গল্প তৈরি। যেথানে পুরুষতন্ত্রের সমালোচনা থাকে প্রচ্ছন্ন রূপেই। কখনই তা গল্পের মূল হয়ে দাঁড়ায় না।
পরিচালর শশাঙ্ক চতুর্বেদী প্রথম থেকেই সিরিজকে সাজিয়েছেন ভালো-মন্দর বিচারে। অর্থাৎ দুই নারী এবং তাঁদের মুখোশ খোলার লড়াইকেই সিরিজের মূল সূত্র ধরেছেন। যেখানে একদিকে পুলিশ অফিসার বিদ্যা জ্য়োতি (কাজল) ও অন্যদিকে বড়লোক বাড়ির নির্যাতিত বধূ সোমিয়া (কৃতী স্যানন)। 'দো পত্তি'র গল্পে দুই তাসের মতো এই দুই চরিত্রের মধ্য়ে রেষারেষি এবং খেলাই আসল মারপ্যাঁচ। বিশেষ করে, মিথ্যার জাল বুনে কৃতী স্যাননের কাজলকে অপদস্ত করাই এই সিনেমার আসল টুইস্ট।
নানা মারপ্য়াঁচে ভালোই গল্প জমে ছিল। কিন্তু গণ্ডগোল বাঁধল চিত্রনাট্যে। দুই নায়িকাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে, চিত্রনাট্য যেন ঢাকা পড়ে গেল। ফলে ছবির প্রথম দিকে আশা জাগিয়েও, পরের দিকে একেবারেই ঢিলে হয়ে গেল চিত্রনাট্যের বাঁধন।
অভিনয়ের দিক থেকে কাজল থাকলেও, গোটা নজর যাবে কৃতীর দিকেই। সোমিয়ার চরিত্রে অসাধারণ কৃতী। নিজের প্রোডাকশনে তৈরি ছবি হলেও, তাঁর অভিনয়ে কোনও মালিকানা সুলভ আদবকায়দা ছিল না। তবে উলটোটাই করলেন কাজল। কোনও ভাবেই পুলিশ অফিসারের চরিত্রে নিজেকে দাঁড় করাতে পারলেন না। প্রচুর স্ক্রিন টাইম পাওয়া সত্ত্বেও, কাজল বেশ দুর্বল। শাহির শেখ, তনভি আজমি, বিজেন্দ্র কলা, বিবেক মুসরান, নিজেদের জায়গায় একেবারে ঠিকঠাক। সব মিলিয়ে 'দো পত্তি' একেবারেই মধ্যমানের এক সিরিজ। যা কিনা না দেখলেও চলে।