অর্ণব আইচ: রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে আদালতের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। বৃহস্পতিবার ধৃত তিনজনকে ফের নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করতেই তিরস্কৃত হলেন তদন্তকারীরা। বিচারকের প্রশ্ন, ৯ দিন ধরে হেফাজতে রাখার সুযোগে পেয়েও কী করেছেন? বৃহস্পতিবার বিচারভবনে ইডির বিশেষ আদালতে রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার নতুন তিন অভিযুক্ত - জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শান্তনু ভট্টাচার্য, ব্যবসায়ী হিতেশ চন্দক ও মিল মালিক সুব্রত ঘোষকে পেশ করা হয়। ইডি তাঁদের পাঁচদিনের হেফাজত চায়। তাঁদের দুদিনের হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
এদিন ইডি তিনজনকে ফের হেফাজতে চাইতেই বিচারক প্রশ্ন করেন, কেন হেফাজতে চাওয়া হচ্ছে? ইডির জবাব, সাক্ষীদের সঙ্গে অভিযুক্তদের বসানো হবে। বিচারক জানান, ন দিন তাঁরা ইডি হেফাজতে ছিলেন। কী করেছে ইডি? তাতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের দাবি, তাঁদের জেরা করা হয়েছে। এছাড়াও আরও দশজনকে জেরা করা হয়েছে। এমন তথ্য মিলেছে যে, টাকা সরানোর জন্য নকল গয়না আসল বলে বিক্রি করা হয়েছে। বিচারক প্রশ্ন করেন, অভিযুক্তদের এক বছর আগে জেরা করা হয়েছিল। একমাত্র প্রয়োজনেই হেফাজতে নেওয়া যায়। তাতে ইডির জবাব, পেন ড্রাইভের মতো বৈদ্যুতিন নথি পরীক্ষা করতে হবে। এক অভিযুক্তর পক্ষের আইনজীবীর দাবি, বৈদ্যুতিন নথির তথ্য পরিবর্তন করা যায়। বিচারক ইডিকে বলেন, তাঁরা পুলিশ নন। কিন্তু তদন্তের জন্য তাঁদের কিছু পদ্ধতি মানতে হবে। তাঁরা যেন কেন্দ্রীয় ফরেনসিকের কাছ থেকে সাহায্য নেন।
ইডির দাবি, উদ্ধার হওয়া কয়েক হাজার ছবি নিয়ে কাজ করতে হবে। হিতেশের ডেলিভারি অর্ডারও উদ্ধার হয়েছে। জ্যোতিপ্রিয়র হিসাবরক্ষক শান্তনুর আইনজীবীর দাবি, তাঁকে ২৮ বার ইডি জেরা করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও বিশেষ অভিযোগ নেই। তিনি নথি পরীক্ষা করেছেন মাত্র। কোনও নথি তৈরি করেননি। বলা হয়েছিল, ২০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। সেই দুর্নীতির পরিমাণ ৯০০ কোটি টাকায় নেমে এল কীভাবে? অভিযুক্ত হিতেশ চন্দক সম্প্রতি এক পরিজনের দেহ অন্ত্যেষ্টি করেন। তাই ধর্মীয় রীতি মেনে তাঁকে তিনদিন গঙ্গাস্নান করতে হবে বলে জানানো হয়। যদিও ইডির দাবি, গঙ্গাজল ঘরে এনে পুজো করলেও একই পু্ণ্য হয়। তাই ধর্মীয় রীতিমর জন্য ইডির একটি ঘর ছেড়ে দেওয়া হবে। সেখানে দুঘণ্টার জন্য পুরোহিত এসে হিতেশের সঙ্গে ধর্মীয় রীতি পালন করতে পারেন বলে আদালতে আবেদন ইডির।