সৈকত মাইতি, তমলুক: পুরনো দিনের টাকা, কয়েনের বিনিময়ে ১০ লক্ষ টাকার টোপ। সোশ্যাল মিডিয়ার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার শিকার তমলুকের (Tamluk) যুবক। ইতিমধ্যেই তমলুক সাইবার থানার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রতারিত যুবক।
জানা গিয়েছে, তমলুক থানার কালিকাপুর এলাকার বাসিন্দা শ্রীকান্ত মাইতি। কলকাতার একটি প্লাস্টিক ব্যাগ তৈরির কারখানায় কাজ করেন তিনি। চলতি মাসের শুরুতেই ফেসবুকে পুরনো কয়েন এবং নোটের বিনিময়ে মোটা অংকের টাকার বিজ্ঞাপন তাঁর নজরে পড়ে। মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা শ্রীকান্ত সেই বিজ্ঞাপনের দেওয়া ফোন নম্বরে ফোন করেই ফাঁদে পড়ে যান। নিজের কাছে থাকা বেশ কিছু পুরনো দিনের নোট রয়েছে বলে জানিয়ে ফোন করতেই ওই নোটগুলি হোয়াটসঅ্যাপে ছবি তুলে পাঠাতে বলে প্রতারকেরা। সেই মতো ছবি পাঠানোর পর দুটি এক টাকার নোট এবং একটি করে দু টাকা এবং পাঁচ টাকার নোট সিলেক্ট করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এবং শ্রীকান্তর কাছে থাকা ওই আসল নোট গুলির বিনিময়ে নগদ ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। প্রতারকদের এই কথার জালে পড়ে সম্মতি জানাতেই একের পর এক শর্ত আরোপ করতে শুরু করে অভিযুক্তরা।
[আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে হিসাব বহির্ভূত বিপুল টাকার লেনদেন! গ্রেপ্তার কনস্টেবলের স্ত্রী]
শ্রীকান্তবাবুর দাবি, বিপুল পরিমাণ এই টাকা পেতে গেলে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের একটি সার্টিফিকেট বানানোর জন্য প্রথমে আধার কার্ড ভোটার কার্ড সহ অন্যান্য আইডি কার্ড গুলি চেয়ে পাঠানো হয়। অনলাইনে সেই সমস্ত ডকুমেন্টস পাঠানোর পর আর বি আই এর ফর্ম চার্জ, ইমেইল চার্জ ট্যাক্স চালান, জিএসটি, টি ডি এস চার্জ বাবদ ৯৮ হাজার ৭১৯ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকেরা। তার বিনিময়ে নগদ ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭১৯ টাকা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। কিন্তু অনলাইন অ্যাকাউন্ট ট্রানজেকশনের সমস্যা রয়েছে জানিয়ে সম্পূর্ণ এই টাকা নগদে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানায় প্রতারকেরা। গত ১৪ তারিখ সেই টাকা দুপুর আড়াইটা নাগাদ বাড়িতে পৌঁছানোর কথা ছিল। টাকা ডেলিভারির ক্ষেত্রে কোম্পানির আইডি নাম্বার জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু আইডি নম্বর শ্রীকান্তবাবুর কাছে না থাকায় আরও ১৪৮০০ টাকা দাবি করে অভিযুক্তরা। শেষ পর্যন্ত প্রতারিত হয়েছেন বুঝে তিনি সাইবার থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন। তমলুকের মহাকুমা পুলিশ আধিকারিক শাকিব আহমেদ জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে।