বিক্রম রায়, কোচবিহার: উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য কিংবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার পক্ষে আওয়াজ তুলেছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ (BJP MP) জন বার্লা। আর এই দাবি মাধ্যমে তিনি উত্তরবঙ্গের শান্তি বিঘ্নিত করতে চাইছেন। এই মর্মে সাংসদের বিরুদ্ধে দায়ের হল অভিযোগ। কোচবিহার (Cooch Behar)জেলার যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি জাকারিয়া হোসেন কোচবিহারের দিনহাটা থানায় এফআইআর (FIR) দায়ের করেছেন। তাঁর মূল অভিযোগ, বার্লা যা বলছেন, তা সর্বৈব মিথ্যা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত, এই দাবিই ভিত্তিহীন। বিজেপি সাংসদের এই বিতর্কিত দাবি ঘিরে তরজা আরও বাড়ল।
দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত উত্তরবঙ্গ (North Bengal)। অবিলম্বে তাকে পৃথক রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করে দিতে হবে। তবেই উন্নয়ন সম্ভব। আচমকা এই দাবি তুলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ তথা চা বলয়ের অতি জনপ্রিয় নেতা জন বার্লা (John Barla)। তাঁর এই দাবি ঘিরে বিজেপির অন্দরেই তৈরি হয়েছে দ্বন্দ্ব। দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁর এই অনুন্নয়নের অভিযোগকে সমর্থন জানিয়েছেন। আবার দিলীপ ঘোষ পন্থীরা এই দাবির সঙ্গে একমত নন। সূত্রের খবর, পৃথক রাজ্যের বিষয়টি নিয়ে বার্লার মতামতের বিরোধিতার পর তাঁকে বোঝাতে রবিবার দিলীপ ঘোষ ফোন করেছিলেন সাংসদকে। কিন্তু তারপরও নিজের দাবি থেকে সরতে নারাজ জন বার্লা। তাঁর পালটা দাবি, রাজ্যের নেতাদের তিনি নিজের বক্তব্য যুক্তি দিয়ে বোঝাতে সক্ষম হবেন।
[আরও পড়ুন: পিতা-পুত্রের জোড়া প্রয়াস, দুই মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ বাঁচাতে একসঙ্গে রক্ত দিলেন দু’জন]
সাংসদের এই দাবি শুনেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল তৃণমূল (TMC)। মুখ্যমন্ত্রী নিজে স্পষ্ট বলেছিলেন, ”উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়েই গোটা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। তাকে কেউ ভাঙতে পারবে না।” কিন্তু বার্লা নিজের মতামতে অনড় থাকায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে সোজা আইনি পদক্ষেপ নিল যুব তৃণমূল। কোচবিহারের যুব তৃণমূল নেতার বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত, তা বলতে পারবেন না অতি বড় মিথ্যাবাদীও। বরাবর উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ একসঙ্গে উন্নয়নযজ্ঞে শামিল হয়েছে। কিন্তু বিজেপি সাংসদ অনুন্নয়নের দোহাই দিয়ে পৃথক রাজ্য কিংবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে দাবি তুলে উত্তরবঙ্গের শান্তি বিঘ্নিত করতে চাইছেন, যা মোটেই কাম্য নয়। এটা ষড়যন্ত্র। ফলে ‘বঙ্গভঙ্গ’-এর পক্ষে বিজেপির নতুন স্বর নিয়ে বিতর্কের জল আরও অনেক দূর গড়াতে চলেছে, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট।