স্টাফ রিপোর্টার: মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঝাঁজালো ধোঁয়ায় ঘুম ভেঙেছিল এলাকার বাসিন্দাদের। কোনও কিছু বোঝার আগেই কাশতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। কাশতে কাশতে বমি করে ফেলেছিলেন তাঁদের অনেকেই। গুদামে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পর অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেছিলেন দমকল কর্মীরাও। তখনই তাঁরা বুঝতে পারেন যে, আগুন লেগেছে শুকনো লঙ্কার গুদামে। আর সেই ধোঁয়াই ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাজুড়ে। শুকনো লঙ্কার ধোঁয়া যে এত বিপজ্জনক হতে পারে, প্রথমে তা বুঝতে পারেননি দমকলকর্মীরাও। শেষ পর্যন্ত অক্সিজেন মাস্ক পরে গুদামে ঢোকে দমকলবাহিনী। দমকলের ১৫টি ইঞ্জিনের সাহায্যে আয়ত্তে আনা হয় আগুন। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন এলাকাবাসী।
পুলিশ ও দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে পূর্ব কলকাতার উলটোডাঙা থানা এলাকার ক্যানাল সার্কুলার রোডের কাছে কৃত্তিবাস মুখার্জি রোডে এই ঘটনা ঘটে। সেখানেই একটি বাড়ির দোতলায় শুকনো লঙ্কার গুদাম তথা লঙ্কা ও হলুদ পেশাইয়ের কারখানায় আগুন লাগে। রাত সোয়া বারোটা নাগাদ দমকলের কাছে গুদামে আগুন লাগার খবর আসে। কিন্তু লঙ্কার বস্তা পুড়তে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁজালো গন্ধযুক্ত ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে পুরো এলাকায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। এলাকার বাসিন্দারা প্রথমে জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কাছাকাছি যেতেই পারেননি কেউ। উলটে কাশতে শুরু করেন তাঁরা। কয়েকজনের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
[কলকাতা থেকে ঢাকা গেল প্রথম কন্টেনার ট্রেন]
ঘটনাস্থলে দমকল এসে আগুন নেভাতে শুরু করে। কিন্তু লঙ্কার পোড়া ধোঁয়ায় অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন দমকলকর্মীরাও। তাঁদের মধ্যেও কয়েকজন কাশতে কাশতে বমি করে ফেলেন বলে এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পৌঁছে যায় কলকাতা পুলিশের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ(ডিএমজি)। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এলাকার কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান অনিন্দ্য রাউত। তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় আতঙ্ক। রাতেই শিশু ও মহিলাদের অনেকটা দূরে সরিয়ে নিয়ে যান স্থানীয়রা। এর মধ্যেই গুদাম ও কারখানাটি আগুনের গ্রাসে যেতে শুরু করে। আগুন নেভাতেও কিছুটা দেরি হয়। ভিতরে ঢোকা ছাড়া দমকল ও ডিএমজি-র উপায় ছিল না। তাই পিঠে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও মুখে মাস্ক বেঁধেই দমকল ও ডিএমজি গুদামের ভিতরে ঢোকে। এলাকাটি ঘিঞ্জি হওয়ায় যাতে গুদাম থেকে আগুন না ছড়িয়ে পড়ে, সেই চেষ্টাও করতে থাকে দমকল। ১৫টি ইঞ্জিন আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে। আগুনের কারণ খতিয়ে দেখছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। কারখানা তথা গুদামটির লাইসেন্স ছিল কি না, তা জানতে মালিক বিজয় কুমার সিংকে ধরার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[পঞ্চায়েতে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী তত্ত্বে ঘুরিয়ে কংগ্রেসকে সমর্থন বিমানের]
The post মধ্যরাতে মানিকতলায় ‘লঙ্কাকাণ্ড’, ঝাঁজালো ধোঁয়ায় নাকাল বাসিন্দারা appeared first on Sangbad Pratidin.