সুকুমার সরকার, ঢাকা: আগুনের অভিশাপ থেকে মুক্তি মিলছে না বাংলাদেশের (Bangladesh)! বিশেষত রাজধানী ঢাকাবাসীর (Dhaka)। সোমবার দুপুরে ফের পুরনো ঢাকার চকবাজারের একটি বহুতলে অবস্থিত পলিথিন কারখানায় আগুন লাগে। ওই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ বেশ কয়েকজন। দমকলের ১০টি ইঞ্জিনের বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঠিক কী কারণে আগুন লেগেছিল তা এখনও জানা যায়নি।
পুলিশ ও দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ আগুন লাগে পুরনো ঢাকার চকবাজার কামালবাগের দেবীদ্বার ঘাটের একটি পলিথিন কারখানায়। খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ ও দমকল বাহিনী। দমকলের ১০টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় দুপুর ২টা ২০ মিনিট নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। যদিও ততক্ষণে আগুন ঝলসে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। এখনও পর্যন্ত এদের মধ্যে চারজনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃতেরা হলেন মহম্মদ শরিফ (১৫), মহম্মদ বিল্লাল (৩৫), মহম্মদ স্বপন (২২) ও মহম্মদ ওসমান (২৫)।
[আরও পড়ুন: পিৎজার মণ্ডের উপর ঝুলছে শৌচালয় পরিষ্কারের ব্রাশ! নিন্দার ঝড় নেটদুনিয়ায়, কী সাফাই সংস্থার?]
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া শাখার আধিকারিক শাহজাহান সিকদার বলেন, “এখনও পর্যন্ত আমরা ভবনের দুই তলা, তিন তলা ও চার তলায় অনুসন্ধান করে ৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। এখনও ভবনের বিভিন্ন রুমে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। আগুন লাগার প্রায় ২ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিস।”
[আরও পড়ুন: এবার ৪টি দুর্নীতি মামলায় দোষী সু কি, ছ’বছরের জেল মায়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রীর]
প্রসঙ্গত, এর আগেও পুরনো ঢাকার অলি-গলিতে অগ্নিকাণ্ডে পুড়েছে শত শত প্রাণ। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুনে পুড়ে মারা যান ৬৭ জন। তার আগে নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয় ১২৪ জনের। দুই ঘটনার জন্যই দায়ী করা হয় অবৈধভাবে পরিচালিত কেমিক্যালের গুদামের ব্যবসাকে। আবাসিক এলাকায় রাসায়নিকের কারখানা বা গুদাম করা আইনত নিষিদ্ধ হলেও পুরনো ঢাকার রাসায়নিকের বাণিজ্য চলছে। এই নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
একটি পরিসংখ্যান বলছে, গত এক দশকে পুরনো ঢাকায় আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ (১৪৯৩ জন)। অন্যদিকে এক দশকে আগ্নিকাণ্ডে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৪ হাজার ২৮৬ কোটি ৮৬ লাখ ৬২ হাজার ৭৯৪ টাকা।