সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গভীর রাতে ফ্ল্যাটে রহস্যজনকভাবে অগ্নিদগ্ধ বৃদ্ধ দম্পতি। শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এম আর বাঙুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বৃদ্ধ। রাত দু’টো নাগাদ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার গড়ফা থানা এলাকার পূর্বাচলের ওম আবাসনে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম অরুণা রায়চৌধুরি। হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন তাঁর স্বামী তথা অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তা সমীর রায়চৌধুরি। কী করে যে আগুন ধরল তা এখনও স্পষ্ট নয়। ওই দম্পতির একমাত্র ছেলে কর্মসূত্রে পুণেতে থাকেন। তাঁর কাছে মায়ের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর খবর পৌঁছেছে। তিনি কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। রেনুকা রায়চৌধুরির মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটনে খুব শিগগির ছেলেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। সমীরবাবু সুস্থ হয়ে উঠলে তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
[ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে সহকর্মীর স্বামীর সঙ্গে দিদিমণির প্রেম, শহরের স্কুলে চাঞ্চল্য]
গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত দু’টো নাগাদ আচমকাই আগুন আগুন চিৎকার শুনতে পাওয়া গিয়েছিল রায়চৌধুরিদের ফ্ল্যাট থেকে। বৃদ্ধ দম্পতি একাই থাকতেন। তাই প্রতিবেশীরা তড়িঘড়ি সাহায্যের জন্য ছুটে যান। গিয়ে দেখেন ফ্ল্যাটের কোলাপসিবল গেট, দরজা সবই হাট করে খোলা। বিছানায় পড়ে আছেন অরুণাদেবী। নিচে সমীরবাবু। দু’জনেই মারাত্মকভাবে পুড়ে গিয়েছেন। ফ্ল্যাটের বাথরুম তখনও ধোঁয়ায় অন্ধকার। আশঙ্কাজনক সমীরবাবুর কাছ থেকে জানতে পারেন। দু’জনেই রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। মাঝরাতে অরুণাদেবী বাথরুমে যান। তারপর আর কিছুই জানেন না তিনি। বেশ কিছুক্ষণ পর ঘুমের মধ্যে শরীরে জ্বালাপোড়া শুরু হতেই দেখেন গায়ে আগুনজ্বলা অবস্থাতে তাঁকে জড়িয়ে ধরেছেন স্ত্রী। কোনওরকমে অরুণাদেবীর হাত ছাড়িয়ে নিজেকে মুক্ত করেন। ততক্ষণে মেঝেতে পড়ে গিয়েছেন ওই বৃদ্ধা। এরপর তাঁদের তড়িঘড়ি এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃদ্ধাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। সমীরবাবু সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে কী কারণে আগুন লাগল তা এখনও স্পষ্ট নয়।
স্থানীয়দের বক্তব্য নিয়েও ধন্দে পুলিশ। এটি আত্মহত্যা নাকি খুন তা তদন্ত করে দেখা হবে। কেননা বেশ কিছুদিন ধরে ওই দম্পতির শরীর ভাল যাচ্ছিল না। স্থানীয় এক রিকশাওয়ালা এদিন রাতে তাঁদের ইডলি দিয়ে আসেন। সেই খেয়েই তাঁরা ঘুমোতে যান। তারপর কী এমন ঘটল যে নিজের গায়ে আগুন দিলেন অরুণা রায়চৌধুরি? উঠছে প্রশ্ন। তবে কিছুদিন ধরে দাম্পত্য কলহ চলছিল তাঁদের মধ্যে। একাকিত্বের জন্যে কলহ কিনা তা স্পষ্ট নয়। ছেলেকে জেরা করলেই বিষয়টি জানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কেউ কী তাঁদের গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল? নাকি একাকিত্ব থেকে মুক্তি পেতে অরুণাদেবী স্বামীর সঙ্গে আত্মঘাতী হতে চেয়েছিলেন? প্রতিবেশীরা দেখেছিলেন ফ্ল্যাটের দরজা খোলা রয়েছে। সব মিলিয়ে অন্ধকারে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
[অগ্নিমূল্য সবজি-ফলের বাজারে, বিশ্বকর্মা পুজোয় বিপাকে আম জনতা]