রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: এক-দুটো নয়, একেবারে ৩৩টি তেলিয়া-ভোলা মাছ উঠল দিঘা (Digha) মোহনার মৎস্যজীবীদের জালে। আর তার যা দাম উঠল, তাতে রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়। লাখ পেরিয়ে কোটি টাকায় পৌঁছে গেল মাছগুলির মূল্য! বিশ্বাস না হলেও এটাই সত্যি। মোহনায় যা নিয়ে মঙ্গলবার রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। একসঙ্গে এত তেলিয়া-ভোলা মাছ দেখতে ভিড় জমান স্থানীয় মানুষ থেকে পর্যটকরা।
জানা গিয়েছে, অন্যদিনের মতো এদিন সকালেও আট-ন’জন মৎস্যজীবী মা ধরতে মা বাসন্তী ট্রলারে চেপে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিলেন। সাগরে জাল ফেলতেই ধরা পড়ে একের পর এক পূর্ণ দৈর্ঘ্যে ৩৩টি তেলিয়া-ভোলা মাছ। একসঙ্গে এতগুলি মাছ জালে ধরা পড়ায় অভিভূত হয়ে যান মৎস্যজীবীরা। এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে দিঘা মোহনায় ফিরে আসেন তাঁরা। একটি ট্রলারে একসঙ্গে ৩৩টি তেলিয়া-ভোলা মাছ ওঠার খবর ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। প্রায় কোটি টাকার মাছের ‘মেলা’ দেখতে ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দা থেকে মৎস্যজীবী, পর্যটকরা।
[আরও পড়ুন: ভরতির পর রোগ নির্ণয়ে ৫ হাজারের বেশি খরচ নয়, ‘স্বাস্থ্যসাথী’ নিয়ে নয়া নির্দেশিকা]
মাছগুলিকে দুপুরের দিকে নিয়ে যাওয়া হয় দিঘা মোহনা মৎস্য নিলাম কেন্দ্রে। সেখানেই ৩৩টি মাছের দাম ওঠে প্রায় ১ কোটি টাকা! দিঘা-মোহনা মৎস্য বাজারের আড়তদার শ্যামসুন্দর দাসের কাছে ৩৩টি তেলিয়া-ভোলা মাছ আনা হয়। শ্যামসুন্দর দাস বলেন, “একসঙ্গে একই ধরনের এত পূর্ণবয়স্ক মাছ জালে পড়ার ঘটনা বেনজির। ৩৩টি তেলিয়া-ভোলা মাছের মোট ওজন ৩৮৬ কেজি। মাছগুলিকে নিলামে তোলা হলে প্রতি কেজি প্রায় ১৩ হাজার টাকা দাম ওঠে। বিকেলের মধ্যেই ৩৩টি তেলিয়া-ভোলার দাম ৯০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে।” প্রায় কোটি টাকা দাম ছুঁয়ে ফেলবে বলে আশাবাদী আড়তদার শ্যামসুন্দর দাস। স্বাভাবিকভাবে হাসি ফুটেছে মৎস্যজীবীদের মুখেও। তপন ওঝা নামে এক মৎস্যজীবী জানান, করোনা, লকডাউনের সঙ্গে নিম্নচাপের বৃষ্টির জেরে দীর্ঘদিন জালে ভাল মাছ ওঠেনি। ইলিশের মরশুমেও একেবারে খরা গিয়েছে। এবার একসঙ্গে ৩৩টি তেলিয়া-ভোলা মাছ ধরা পড়ায় অনেকটাই স্বস্তি।
স্থানীয় এক মৎসজীবী জানান, মাছগুলি কলকাতা (Kolkata) নিয়ে এসে শিয়ালদহে বিক্রি করা হবে। এছাড়া এই মাছের পটকা থেকে ক্যাপসুল তৈরি হয়। তাছাড়া অপারেশনের সময় যে সুতো ব্যবহৃত হয়, সেটিও এই মাছের পটকা থেকেই তৈরি হয়।