রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও জ্যোতি চক্রবর্তী: নতুন রাজ্য কমিটিতে গুরুত্ব নেই মতুয়া (Motua) সম্প্রদায়ের জনপ্রতিনিধিদের। সেই ক্ষোভে দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন উত্তর ২৪ পরগনার ৫ বিজেপি (BJP) বিধায়ক। ফলে গেরুয়া শিবিরে অন্তর্দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হল। মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার দরবারে যেতে চলেছেন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন দলের আরও দুই নেতা – রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শীলভদ্র দত্ত।
শনিবারই বিজেপির বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতির নামের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। আর সেই তালিকা প্রকাশের পর বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ (WhatsApp Group) থেকে নিজেদের সরিয়ে নিলেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার পাঁচ বিধায়ক (MLA)। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার, রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী ও কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায়। সূত্রের খবর, বঙ্গ বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নতুন সভাপতিদের মধ্যে মতুয়াদের প্রাধান্য দেওয়া হয়নি। সে কারণেই তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনও বিধায়করা প্রকাশ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
সূত্রের খবর, মতুয়াদের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে ক্ষোভ মেটাতে আসরে নামছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (Santanu Thakur)। তিনি জে পি নাড্ডার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য সময় চেয়েছেন। এ বিষয়ে জে পি নাড্ডাকেও নালিশ জানাতে চান। প্রসঙ্গত, বাংলার মতুয়া ভোটব্যাংক নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সেইমতো গত নির্বাচনে মতুয়া শিবির থেকে বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিও পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু তাঁদের একটা বড় অংশেই এবার ‘বিদ্রোহে’র সুর।
[আরও পড়ুন: হিন্দু বনাম হিন্দুত্ববাদী মন্তব্যের জের, রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মামলা আসানসোলের আইনজীবীর]
উল্লেখ্য, নয়া রাজ্য কমিটির কোনও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে মতুয়াদের কোনও প্রতিনিধিকে রাখা হয়নি। যা নিয়ে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে দলের একাংশে। আবার বনগাঁ জেলা কমিটির নয়া সভাপতি পদেও যাঁকে আনা হয়েছে, তিনিও মতুয়া সম্প্রদায়ের নন। একদিকে, ৫ বিজেপি বিধায়কের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া নিয়ে অস্বস্তিতে দল, অন্যদিকে শনিবারই দলের রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য নেতা শীলভদ্র দত্তও উত্তর শহরতলি জেলায় দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। এবার উত্তর কলকাতা জেলার ইনচার্জ করা হয়েছিল শীলভদ্রকে। কিন্তু তাঁর সঙ্গেও দলের দূরত্ব বেড়েছে। যদিও এ নিয়ে শীলভদ্রর প্রতিক্রিয়া, ”গ্রুপ ছেড়েছি অন্য কারণে। বিজেপিতেই খুশি আছি।” ভোটে হেরে যখন স্নায়ুর চাপে ভেঙে পড়েছে বিজেপি, সেসময় বিধায়ক, নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়ার হিড়িকে কার্যত হিমশিম দশা গেরুয়া ব্রিগেডে।
[আরও পড়ুন: বিষ খাইয়ে ‘খুন’ ৩ কুকুরছানা! নৃশংস ঘটনায় প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের মালিকের]
অন্যদিকে, বনগাঁ বিজেপি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বদলের পর শনিবার সন্ধেবেলা পার্টি অফিসের বাইরে অশান্তি বাঁধে। দলের ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর চলে কার্যালয়েও। তবে কারা এই ঘটনা ঘটাল, সে বিষয়ে কোনও বক্তব্য মেলেনি বিজেপির তরফে। জেলা রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, এটা দলের অন্দরের বিক্ষোভ।