বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: পয়লা মে (May Day) শ্রমিক দিবস। শ্রমজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইকে শ্রদ্ধা জানানোর দিন। সমাজের একাংশের বাঁকা চাহনি সমালোচনা থাকলেও, বিভিন্ন পরিস্থিতির শিকার হয়ে জীবন ধারণের তাগিদে যৌনকর্মী হিসেবে দেহ ব্যবসার পথ বেছে নিতে হয় অনেককেই। সমাজে যৌন লাঞ্ছনা, শ্লীলতাহানির মত নানা অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হন তাঁরাও। এসবের হাত থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে এবার শ্রমিকের অধিকার পাওয়ার দাবিতে গর্জে উঠলেন যৌনপল্লির মহিলারা। শ্রমিক দিবসে কাজ বন্ধ রেখে প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করলেন কলকাতা ও শান্তিপুরের (Santipur) দুর্বার সমিতির সদস্যরা।
কেন্দ্রীয় সরকারের ট্রাফিকিং ইন পার্সনস (প্রিভেনশন কেয়ার এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন) বিলের কারণে বিপদের মুখে পড়তে পারে যৌনপেশা (Flesh Traders)। এমন আশঙ্কায় কাঁটা যৌনকর্মীরা। কারণ, এই বিলটি আইনে পরিণত হলে অপরাধের তালিকার মধ্যে ঢুকে যাবে যৌনপেশা। যার ফলে তাঁদের উপর নির্যাতন আরও বাড়তে পারে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবারই উত্তর কলকাতায় একটি মশাল মিছিলে শামিল হয়েছিলেন তাঁরা। দাবি বেশ কয়েকটা। যৌনপেশাকে শ্রম তালিকার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ৪৫ বছরের বেশি বয়সি যৌনকর্মীদের সরকারি পেনশন দিতে হবে। চাই সামাজিক সুরক্ষা।
[আরও পড়ুন: কংগ্রেসের সঙ্গে হল না বনিবনা, সোমবারই নতুন দল ঘোষণা করবেন প্রশান্ত কিশোর!]
যদিও সামাজিক সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই দুর্বার মহিলা সমিতির উদ্যোগে কলকাতার যৌনপল্লিগুলিতে সচিত্র পরিচয়পত্র এবং রেশন কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। সেই দাবিতে রবিবার নদিয়ার শান্তিপুরের যৌনপল্লিতে প্রায় ২০০ যৌনকর্মী বিক্ষোভ পালন করেন। অংশ নিয়েছেন ৪৫ বছরের কম বয়সিরাও। এদিন তাঁরা একদিনের প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করেন।
[আরও পড়ুন: শপথবাক্য পাঠ নিয়ে সিদ্ধান্ত বদলের আরজি বাবুলের, অনুরোধ খারিজ করলেন রাজ্যপাল]
এর আগে দীর্ঘ সময় করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতির কারণে সারা বাংলায় ৬৫ হাজার যৌনকর্মীর রোজকার জীবন আচমকা অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। মহামারী রুখতে রোগ সংক্রমণের কথা ভেবে নিজেরাই বাধ্য হয়ে কর্মবিরতি ঘোষণা করেছিলেন তাঁরা। মাঝেমধ্যে সামান্য কিছু সরকারি সহায়তা পেলেও পুলিশি এবং অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তির অত্যাচারের শিকার হয়েছেন যৌনকর্মীরা। এবার তাই এসব কাটিয়ে সুরক্ষিত জীবনের দাবিতে প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করলেন তাঁরা।