দেব গোস্বামী, বোলপুর: অনুব্রত মণ্ডলের বোলপুরে প্রত্যাবর্তনের দিনেই প্রশাসনিক কাজে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জল্পনা শোনা যাচ্ছিল, বিকেলে কেষ্টর সঙ্গে বৈঠকও করবেন তিনি। কিন্তু জল্পনায় জল ঢেলে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই কলকাতার পথে রওনা হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ বোলপুর গিয়েও কেষ্টর সঙ্গে দেখা করলেন না তিনি। বুঝিয়ে দিলেন, আপাতত তাঁর মূল নজর বন্যা পরিস্থিতি ও দুর্গতদের সাহায্য করা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের সুসম্পর্কের কথা অবিদিত নয় কারও। তিনি রাজনৈতিক বৃত্তেরই হোক বা তার বাইরের। সিপিএম জমানা থেকে লড়াই করে বীরভূমের লালমাটিতে ঘাসফুলকে দাপটের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করা অনুব্রত গোড়া থেকে মমতার অত্যন্ত স্নেহভাজন, ঘনিষ্ঠ। ২০২২ সালে যখন গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে নিচুপট্টির বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় সিবিআই, তখন থেকেই মমতার একটাই প্রতিক্রিয়া, ষড়যন্ত্র হয়েছে। একদিন ছাড়া পেয়ে যাবে। সেই কারণে সম্ভবত বীরভূমের জেলা সভাপতি পদটি তিনি ফাঁকা রেখেছিলেন। সাংগঠনিক কাজ চালাতে গড়ে দিয়েছিলেন কোর কমিটি। ঘটনাচক্রে ২ বছর পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। জেল থেকে বেরিয়ে বলেছেন ‘দিদি’র কথাই।
এদিকে কেষ্টর বোলপুর ফেরার দিনই খোদ মুখ্যমন্ত্রী নিজে ছিলেন ওই জেলায়। ফলে উভয়ের সাক্ষাৎ প্রায় নিশ্চিত ছিল। প্রথমে মনে করা হচ্ছিল, বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠকেই থাকতে পারেন অনুব্রত। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্তও তা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও খবর ছিল না কারও কাছেই। সবটাই ছিল জল্পনার স্তরে। পরে শোনা যায়, কোনও প্রশাসনিক বৈঠকে নয়, ‘দিদি’র সঙ্গে একাই দেখা করতে চান কেষ্ট। আর মমতা তাঁকে সেই সময়ও দিয়েছেন। কিন্তু দেখা হল না। এদিন বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে, প্রশাসনের কর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েই কলকাতার পথে রওনা হন মুখ্যমন্ত্রী। আপাতত বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য।