নন্দন দত্ত, সিউড়ি: পাঁচ মাস পরে নিজের গড়ে ফিরলেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। সাতদিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশের পরেই একে-একে নেতা থেকে কর্মী সকলে দুবরাজপুর থানায় ঢুকে দেখে আসেন তাঁদের নেতাকে। কারোর হাতে ছিল প্রসাদী ফুল তো কেউ নিয়ে এসেছিলেন ফুলের তোড়া কেউবা এনেছিলেন প্রসাদ। যদিও এই তালিকায় তাঁর মেয়ে সুকন্যা ছিলেন না। স্বভাবতই কর্মীদের দেখে খুশি তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রতও। এদিকে ইডি প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন তিনি।
গত ১১ আগস্ট গরু পাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) বোলপুরের নিচু পট্টির বাড়ি থেকে অনুব্রতকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তারপর থেকে ১৩১ দিন আসানসোলের জেলে বন্দি। সোমবার তাঁর বিরুদ্ধে দুবরাজপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। মঙ্গলবার সকালে আসনসোল থেকে দুবরাজপুর আসার আগেই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আদালত চত্বরে ভিড় জমান জেলার নেতারা। আদালতের লক আপে থাকার সময়ই অনুব্রতর সঙ্গে দেখা করেন আইনজীবী তথা দলের মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায়, ব্লক সভাপতি ভোলা মিত্র, পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে।
[আরও পড়ুন: ইন্ডিয়ান অয়েলের পাইপ ফেটে হু হু করে বেরচ্ছে ডিজেল! দেদার লুট শুরু স্থানীয়দের]
আদালত চত্বরে তখন থিকথিক করছে ভিড়। দুবরাজপুর শহর সভাপতি স্বরুপ আচার্য থেকে দলের সব কাউন্সিলর হাজির। এরই মাঝে হাতে ফুলের তোড়া নিয়ে বুকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডল, মদন মিত্রের ছবি লাগিয়ে হাজির রাজু গড়াই। তিনি দুবরাজপুর পুরসভার কর্মী। তিনি জানান, “দাদাকে বহুদিন পরে দেখছি। অনেক কথা বলার আছে। আপাতত জেলায় ফেরায় তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানাতে চেয়েছিলাম।” এসেছিলেন খয়রাশোলের ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী। খয়রাশলের পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রজত মুখোপাধ্যায়। জেলার দুই বিবাদমান গোষ্ঠী উজ্জ্বল কাদেরি ও আনিসুর রহমান দুজনই কিন্তু অনুব্রতর টানে আদালত চত্বরে হাজির। লোবা,পদুমা-সহ এলাকার সব অঞ্চল সভাপতিরা। তাঁদের একটাই আশা, দাদা সুস্থ হয়ে মিথ্যা মামলা থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে ফিরে আসুক।
পাঁচ মাস অনুব্রত জেলায় নেই। আদালতে বিচারকের রায়ে সাতদিন দুবরাজপুর পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ পেতেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন জেলার নেতারা। পুলিশ ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরার নিচে অনুব্রতকে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। থানার এসআইদের থাকার একটি ঘরকে আপাতত গারদ হিসাবে বেছে নিয়ে এদিন বিকেল পর্যন্ত রাখা হয় তাঁকে। দুপুরে পুলিশ হেফাজতে যাওয়ার পর থেকে এক মুহূর্ত বিরাম পাননি অনুব্রত। লোবা অঞ্চল সভাপতি উজ্জ্বল ঘোষ লোবা মা কালীর পুজোর ফুল নিয়ে ‘দাদা’র সুস্থতার জন্য কপালে স্পর্শ করান। কেউ নিয়ে আসেন প্রসাদ। কাউকেই নিরাশ করেননি তাঁদের প্রিয় নেতা। আসানসোল থেকে জেলায় এসে লুচি, আলুর দম দিয়ে টিফিন সারেন। দুপুরে সামান্য ডাল-ভাত-তরকারি দিয়ে দুপুরের আহার সারেন। তবে বিশ্রামের কোনও সুযোগ পাননি।