সুব্রত বিশ্বাস: নিউ নর্মালে স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। বেড়েছে ট্রেন চলাচলের সংখ্যাও। ঠিক তখন হাওড়া স্টেশনের ফুডপ্লাজা বন্ধ করে রাখায় পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন যাত্রীরা। আইআরসিটিসির ভাড়া মেটাতে অপারগ হওয়ায় ফুডপ্লাজা বন্ধ রেখেছে মেসার্স রমেন ডেকা।
লকডাউনের সময় থেকে ফুডপ্লাজা বন্ধ থাকায় সংস্থার প্রায় দুশো জন কর্মী বেতনহীন হয়ে রয়েছেন। কর্মীরা এমপ্লইজ অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করেছে। হাওড়া স্টেশন জুড়ে পোস্টার দিয়ে মালিকপক্ষকে সতর্ক করার পাশাপাশি ফুডপ্লাজা খোলার দাবি ও বকেয়া মেটানোর দাবি করেছে কর্মীরা।
[আরও পড়ুন: ৯ জানুয়ারি ফের বঙ্গ সফরে জেপি নাড্ডা! জনসভার সম্ভাবনা বোলপুরে]
হাওড়া স্টেশনে যাত্রী পরিষেবার উন্নতির পাশাপাশি আয় বাড়াতে নানা ব্যবহার্য সামগ্রী তৈরির পরিকল্পনা করেছে রেল। এই অবস্থায় ফুডপ্লাজার মতো অপরিহার্য পরিষেবা বন্ধে ক্ষুব্ধ রেল। হাওড়ার ডিআরএম সঞ্জয়কুমার সাহা বলেন, ”পরিষেবা বন্ধ হলে চলবে না। আইআরসিটিসি চালাতে না পারলে জায়গা ছেড়ে দিক। রেল নিজস্ব পরিষেবা চালু করতে পারবে।” সংস্থার সঙ্গে আইআরসিটিসি চুক্তি নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
সংস্থাটি আইআরসিটিসিকে ফুডপ্লাজার জন্য বার্ষিক ভাড়া দেয় ৪.৭৫ কোটি টাকা। সঙ্গে দিতে হয় কর। ফুডপ্লাজা কর্তৃপক্ষ প্লাজার সঙ্গে একটি বাড়তি ৩৫ বর্গ মিটার জুস, আইসক্রিম বিক্রির জন্য ব্যবহার করে। এজন্য বাড়তি লাইসেন্সি দেয় না। আইআরসিটিসি ওই জায়গার জন্য বাড়তি ১.৭৫ কোটি টাকা দাবি করে। যদিও মেসার্স রমেন ডেকার তরফে স্পষ্ট করে হয়েছে বাড়তি জায়গা তাঁদের লিজ চুক্তির অন্তর্ভুক্ত। সংস্থার পক্ষে জানানো হয়েছে, ব্যাংক ঋণ নিয়ে সংস্থা খোলা হলেও লকডাউনে সময় থেকে টাকার যোগান না থাকায় তাঁরা সংস্থা চালাতে পারছেন না। তাই সংস্থাটি খুলতে পারছে না। গত ২৩ ডিসেম্বরে হাওড়ার ফুডপ্লাজা খোলার জন্য ডেকাকে চিঠি দেয় করপোরেশন। যদিও সেটি খোলার কোনও উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট সংস্থা। আইআরসিটিসির গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিস চন্দ্র জানান, সংস্থাটি আর্থিক ক্ষতি উল্লেখের পাশাপাশি সংস্থার এত কর্মীকে নিয়ে চালাতে পারবে না বলে জানিয়েছে। জানুযারি মাসে ফুডপ্লাজা খোলার আশ্বাস দিয়েছে সংস্থা।
[আরও পড়ুন: ‘দিদিকে বক্ষ মাঝে রাখব’, গাইলেন শাহকে মধ্যাহ্নভোজ খাওয়ানো বাসুদেব বাউল]
ফুডপ্লাজার সিনিয়র ম্যানেজার জগন্নাথ সরকার ও সংস্থার এমপ্লইজ অ্যাসোসিয়েশন অভিযোগ করেছে, মার্চ মাস থেকে কর্মীরা বেতনহীন। গত বছর অক্টোবর মাস থেকে পিএফ জমা দেয়নি। অথচ কর্মীদের বেতনে থেকে তা কাটা হয়েছে। পিএফ টাকা না পাওয়ায় মহিলা ক্যাশিয়ার প্রিয়াঙ্কা অনেজা বিনা চিকিৎসায় ক’দিন আগে মারা যান। জুহিতা সরকার নামের এক কর্মী চিকিৎসা করাতে পারছেন না একই কারনে। জগন্নাথবাবুর অভিযোগ, ব্যবসায়িক পাওনাদাররা প্রচুর টাকা পাবেন, তাদের ধরছেন। এই প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি আবার শিয়ালদহতে এক্সিকিউটিভ লাউঞ্জ খুলেছে। প্রথমে এই কর্মীদের নিয়ে শুরু করলেও পরে সরিয়ে দিয়ে বাইরের কর্মীদের নিয়ে আসেন। যেখানে পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। এই টানাপড়েনে অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন যাত্রীরা।