সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: যিশুর জন্মদিনে পুরুলিয়ায় ভালোবাসা ছড়াচ্ছে কেক। কিন্তু ক্রিসমাসের ঐতিহ্য বহন করা প্লাম কেক নয়। ভালোবাসার কেকের নাম লাভ বাইট! হ্যাঁ, পুরুলিয়া শহরের একটি নামকরা কেকের ব্র্যান্ডের তিনটি বিপনীতেই বড়দিনের এই কেক একেবারে মন কেড়ে নিয়েছে। শুধু নামে নয়, স্বাদেও। দামও যে খুব একটা বেশি না। মাত্র ১৬০ টাকা। তাই ক্রিসমাসের সঙ্গে প্লাম কেকের ইতিহাস যতই জড়িয়ে থাক না কেন এবার পুরুলিয়ায় কিন্তু বড়দিনে হিট ওই লাভ বাইট কেক।
তবে বড়দিনের রসনা তৃপ্তিতে আরও কেকের আয়োজন রয়েছে পুরুলিয়ায়। ২০০ টাকায় নলেন গুড় কেক। জিভে জল আসার মতোই সুস্বাদু। রয়েছে ১৬০ টাকায় মেরি ক্রিসমাস কেক। এছাড়া ৪৩০ টাকার সেলিব্রেশন ফ্রুট কেক। ওই একই দামে রিচি রিচ ফ্রুট কেকও দেদার বিক্রি হচ্ছে। তবে কিশোর-কিশোরী থেকে তরুণ-তরুণীরা এই শহরে যেন লাভ বাইট কেক-ই খুঁজছেন! ওই কেকে ঠিক কি রয়েছে? শহর পুরুলিয়ার বাসস্ট্যান্ডের পেছনে ওই নামকরা ব্র্যান্ডের কেকের বিপনির কর্ণধার মনীশ গুপ্তা বলেন, "৩৫০ গ্রাম ওজনের ওই লাভ বাইট কেকে যথেষ্ট পরিমাণে ফ্রুট রয়েছে। সেই কারণেই এতটা সুস্বাদু। তাছাড়া মোড়ক ও নাম তো একটা বড় বিষয়। সেই কারণে ওই কেকটা নামেও কাটছে। একেবারে ভালোবাসার কামড়। কেকে দাঁত বসালেই ভালোবাসা।" আসলে লাভ বাইট যেমনটা হয় আর কি! কামড়ের যন্ত্রনা একটু থাকলেও তা ভুলিয়ে দেয় ভালোবাসা।
ছবি: সুমিত বিশ্বাস
তবে বড়দিনের ঐতিহ্যবাহী প্লাম কেক। তাই লাভ বাইট কেকের পরই ওই কেক রয়েছে। তবে ১ কেজির সেলিব্রেশন ফ্রুট কেক ও রিচি রিচ ফ্রুট কেকের বিক্রিও বেশ ভালো। পুরুলিয়া শহরের দেশবন্ধু রোডের একটি কেকের বিপণীর মালিক দিব্যা গোয়েল বলেন, "আমাদের ফ্রুট কেকের স্বাদ-ই আলাদা। পেস্ট্রি পাওয়া যাচ্ছে ৩৫ টাকা থেকে। সব ধরনের কেকের বিক্রিই বেশ ভালো।" এছাড়া ওই ব্র্যান্ডেড বিপণীতে পেস্ট্রি শুরু আরও কম, মাত্র ১৫ টাকা থেকে। রয়েছে ৮০ টাকা পর্যন্ত। তবে কেকের আরও সম্ভার রয়েছে পুরুলিয়ায়। মার্বেল কেক, প্লেইন কেক, মিল্ক কেক, ভেজি ভেজ কেশিউ নাট কেকও খুব একটা খারাপ বিক্রি হচ্ছে না। এই বড়দিনের প্রাক্কালে প্রান্তিক পুরুলিয়ার বাজারেও কেকের দাম বেশ চড়া হয়েছে।
ছবি: সুমিত বিশ্বাস
ক্রিসমাস কেকের ইতিহাস বলছে, ষোড়শ শতাব্দীতে এই কেক-র জন্ম। প্লাম পোরিজ বা শস্যদানা দিয়ে তৈরি হয়। বড়দিনের আগের দিন উপবাস ভাঙাতে এই কেক খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। কেক তৈরির প্রথম নিদর্শন পাওয়া যায় গ্রিস সভ্যতায়। কথিত আছে, রোমানরা নানা রকমের শুকনো ফল মিশিয়ে প্রথম ফ্রুট কেক তৈরি করে। এই কেক নিয়ে ইউরোপের মানুষজন যতই মাতামাতি করুক না কেন। কেক বেক করার পদ্ধতি কিন্তু এই এশিয়া মহাদেশেই। মিশরে প্রথম কেক বেকিং হয় বলে জানা যায়। এখন উৎসব, পার্টি মানেই যেন কেক। কেক ছাড়া যেন সেলিব্রেশন পূর্ণতা পায় না। আর বড়দিন তো একেবারে কেকময়। যার ছোঁওয়া প্রান্তিক পুরুলিয়াতেও।
