অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: ফের ‘কু ঝিক ঝিক...’ করে ধোঁয়া উড়িয়ে পাহাড়ের পাকদণ্ডী বেয়ে ছুটল টয় ট্রেন। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চারমাস পর রবিবার থেকে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং ট্রেন পরিষেবা চালু হল। পাহাড়ে একটানা বৃষ্টিতে চারিদিকে ধস পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রেললাইন। তাই ৫ জুলাই থেকে এই পরিষেবা বন্ধ করে দেয় দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে। এদিন ৩৫ জন পর্যটক নিয়ে ফের পাহাড়ে ছুটল টয় ট্রেন। বিদেশি পর্যটকরাও এদিন দার্জিলিং গেলেন।
শীত পড়লেই পাহাড়ে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়। বড়দিন, নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে পাহাড়ে ভিড় উপচে পড়ে। তাই পুজোর আগে ঠিক না করতে পারলেও শীতের আগে লাইন মেরামত চ্যালেঞ্জ ছিল দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের। রবিবার উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার ট্রেন পরিষেবা চালু করেন। উপস্থিত ছিলেন দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের অধিকর্তা প্রিয়াংশু।
এদিন ডিআরএম বলেন, "প্রতিবছর বর্ষায় এরকম হয়। কিন্তু এ বছর প্রচুর জায়গায় লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই একটু বেশি সময় লেগে গেল। পুজোর সময় খুব চাহিদা ছিল। কিন্তু আমরা পরিষেবা দিতে পারিনি।" বাঙালির সাধের শৈলশহর দার্জিলিং। পুজোর পরের এই মরশুমে পর্যটকদের ভিড় বেশি হয়। শুধু বাংলা বা ভারতবর্ষ নয়, সারা বিশ্ব থেকে মানুষ আসেন কাঞ্চনজঙ্ঘার শোভা দেখতে ও পাহাড়ি রাস্তায় টয়ট্রেনের নস্ট্যালজিয়া ফিরে পেতে। অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা পর্যটক ক্রিস বলেন, "এই ট্রেন চড়ার জন্যই আমাদের এখানে আসা। খুব ভালো লাগছে এই রোমাঞ্চকর যাত্রা করতে পারছি বলে।" আবার ওড়িশা থেকে এসেছেন ধনঞ্জয় সামন্ত। এদিন বললেন, "আমাদের রাজ্যে তো এই ট্রেন নেই। তাই সুযোগ পেয়ে এই ট্রেনের টিকিট কাটলাম। পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে দার্জিলিং যাব, ভেবেই দারুণ লাগছে।"
তবে ফি বছর বর্ষায় এভাবে পরিষেবা বন্ধ থাকায় টয় ট্রেনের হেরিটেজ তকমা রক্ষা করাই দায় হয়ে গিয়েছিল দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের। তাই এ বছর বেশকিছু কাজ করা হবে লাইনে যাতে বর্ষার সময় লাইন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার বলেন, "কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছি লাইন ঠিক রাখার জন্য সেই কাজ শুরু করা হবে। বর্ষার আগেই কাজ শেষ করে ফেলা হবে।"