প্রসূন বিশ্বাস: ম্যাচ শেষে স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরনো ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা যে কথাগুলো বলছিলেন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের উদ্দেশে, কয়েক মাস আগেও কি তিনি তা ভাবতে পেরেছিলেন? কার্লেস ভাবতে পেরেছিলেন তাঁকে চিল-চিৎকারে দফায় দফায় শুনতে হবে ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি? সুপার কাপ জেতার পর সেই সময় তো তিনি লাল-হলুদ সমর্থকদের কাছে ‘প্রফেসর’ হয়ে উঠেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে নিয়ে তখন উল্লাসে মেতেছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা।
আর আজ! শুক্রবার ম্যাচ শেষে লাল-হলুদ সমর্থকরা হতাশায় স্টেডিয়াম ছাড়ার সময় বলে গেলেন, “ভুল হয়ে গিয়েছিল আমাদের। প্রফেসর হওয়ার যোগ্য নন কুয়াদ্রাত।” তার আগেই অবশ্য ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি শুনে ফেলেছেন তিনি। হারের হ্যাটট্রিকের পর আর এক সমর্থক হতাশায় বলছিলেন, “আনোয়ার ভুল করে এই দলে এসেছে।” হয়তো এ সমস্ত তাঁদের মনের কথা নয়। কিন্তু পরপর ম্যাচ হারের পর হতাশায় এ সবই বেরিয়ে আসছে লাল-হলুদ সমর্থকদের মুখ থেকে।
আর একটি ম্যাচ পরেই ডার্বি। বড় ম্যাচের আগে কোনও আশার কথা শোনাতে পারেননি ইস্টবেঙ্গল কোচ। বরং তাঁর দল এখনও তৈরি হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন। বলছেন, ভবিষ্যতে ফল পাওয়া যাবে। কিন্তু নিজের ভবিষ্যৎ কি বুঝতে পারছেন লাল-হলুদ কোচ? ইস্টবেঙ্গল টিম বাস যখন স্টেডিয়াম ছাড়ছিল, তখন শ’খানেক লাল-হলুদ সমর্থক ফের ‘গো ব্যাক কার্লেস’ স্লোগান তোলেন। কেউ কেউ আবার চিৎকার করে বলতে থাকেন, “কর্তারা এবার ভালো দল গড়ে দিয়েছে। এবার আর বলতে পারবে না দল ভালো নয়। এমন দল নিয়েও এই ফল! উই ওয়ান্ট জাস্টিস।” একই সমর্থকরাই আবার এফসি গোয়ার টিম বাস বেরনোর সময় বোরহার নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছিলেন।
প্রাক্তন ফুটবলাররাও চাঁচাছোলা। বিকাশ পাঁজি বলে ফেললেন, এবার কোচের সঙ্গে ইনভেস্টর আর ক্লাব কর্তাদের বসা উচিত। আর যাঁর বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ সেই বিধ্বস্ত কুয়াদ্রাতের সাফাই, “এটা ভবিষ্যতের দল। অনেক তরুণ ফুটবলার রয়েছে। সময় দিতে হবে দলটাকে। সমর্থকদের আবেগ বুঝি। আমাদেরও আবেগ রয়েছে। একটা ভালো ফল সব কিছু পরিবর্তন করে দেবে।” কিন্তু এই ভালো ফল আর কত দিনে আসবে, সেটাই কোটি টাকার প্রশ্ন। এর পরের ম্যাচ জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে যদি ভালো ফল না হয়, তাহলে ডার্বিতে যথেষ্টই চাপে থাকবেন তিনি।
