সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাতার বিশ্বকাপের (FIFA World Cup) প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে সেনেগালকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ইংল্যান্ড বুঝিয়ে দিল এবারের বিশ্বকাপে তাঁদের ফেভারিট হিসাবে না ধরাটা বোকামি হবে। শুরুতে ইরানের বিরুদ্ধে ৬ গোল দেওয়া থেকে শুরু করে সেনেগালকে উড়িয়ে দেওয়া। একমাত্র আমেরিকা ম্যাচ বাদে বাকি ৩ ম্যাচেই অপ্রতিরোধ্য মনে হয়েছে ইংরেজদের। বাড়িতে ডাকাতি হয়ে যাওয়ায় অভিজ্ঞ উইঙ্গার রহিম স্টারলিং এদিন খেলেননি। তিনি ফিরে গিয়েছেন ইংল্যান্ডে। কিন্তু স্টারলিংকে ছাড়া খেলতে কোনও সমস্যা হল না ইংল্যান্ডের। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে আফ্রিকার অন্যতম শক্তি সেনেগালের বিরুদ্ধে বেগ পেতে হবে থ্রি লায়নদের। কিন্তু তেমনটা হল না। হেন্ডারসন, কেন এবং সাকার গোলে সেনেগালকে উড়িয়ে দিল থ্রি লায়নরা। কেন বিশ্বকাপে অপ্রতিরোধ্য ইংরেজরা? কারণ খুঁজলেন প্রাক্তন মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন।
এক, দুই প্রান্তে অসাধারণ উইং প্লে। একদিকে সাকা অন্যদিকে ফোডেন, ক্রমাগত আক্রমণ শানিয়ে যাওয়ায় সেনেগালের ডিফেন্ডাররা কাকে ধরে কাকে ছাড়বে সেটাই বুঝে উঠতে পারল না।
দুই, ইংল্যান্ডের এই দলে গোল করার অনেক লোক রয়েছে। কে কখন গোল করে দেবে প্রতিপক্ষরা বুঝতেই পারছে না। এদিন হ্যারি কেন গোল করতে গোলদাতার সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল আট। অর্থাৎ আটজন কাতার বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের হয়ে গোল করে গেল। যে কোনও প্রতিপক্ষ দলের কাছে ঘুম কেড়ে নেওয়ার জোগাড়।
[আরও পড়ুন: ‘আপনারা আইপিএলই খেলুন’, বাংলাদেশের কাছে হারতেই নেটদুনিয়ার রোষানলে রোহিতরা]
তিন, কোচ সাউথগেটের প্রশংসা না করে উপায় নেই। প্রতিবার ইংল্যান্ড কোনও বড় আসরে নামে বিশাল প্রত্যাশা জাগিয়ে। কিন্তু দুম করে ফানুসের মতো চুপসে যায়। কিন্তু সাউথগেট কোচ হওয়ার পর গতবার বিশ্বকাপে দলকে সেমিফাইনালে নিয়ে গিয়েছেন। ইউরো কাপে (Euro Cup) নিয়ে গিয়েছিলেন ফাইনালে। তারমানে দলটার মধ্যে একটা বাঁধন আনতে পেরেছেন।
চার, দলগত সংহতির একটা স্পষ্ট ছবি। মেসি, এমবাপে বা রোনাল্ডোর মতো তারকা নেই। হয়তো বলবেন হ্যারি কেন (Hary Kane) আছেন। মানছি। তবু উপরোক্ত তিনজনের পাশে কেনকে রাখা নিয়ে অনেকে সংশয়ে থাকবেন। তাই দলের মধ্যে স্বার্থপরতা দেখা যাচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: আইপিএলের পর আবু ধাবিতে টি-১০ লিগে খেলবেন ধোনি? বড় আপডেট দিল আয়োজকরা]
পাঁচ, কাতারে (Qatar World Cup) গোলের বন্যা আনতে পেরেছে ইংল্যান্ড। প্রতিটি ম্যাচে ওরা একাধিক গোল করছে। এটাই কিন্তু একটা দলের মনোবল বাড়ানোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট। তাই তিন গোলে আটকে যাওয়াটা একটু অবাক হওয়ার মতো। আরও বড় ব্যবধানে জিতলে বরং চিত্রনাট্যের সঙ্গে চরিত্রের তালমিল ঘটতো।
কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ফ্রান্স। এই মুহূর্তে কিলিয়ান এমবাপের আগুন ফর্মে ভর করে ফ্রান্সকে অপ্রতিরোধ্য মনে হচ্ছে। কিন্তু এই ইংল্যান্ডও যে ফ্রান্সকে ছেড়ে কথা বলবে না, সেটা চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায়। ফলাফল যাই হোক, ফ্রান্স বনাম ইংল্যান্ড কোয়ার্টার ফাইনাল বেশ উপভোগ্য ম্যাচ হতে চলেছে।