সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন ফুটবল ফেডারেশনের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ইরানের জাতীয় পতাকাকে (Iran Flag) বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার জেরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বকাপ (Qatar World Cup) থেকেই বয়কট করার দাবি জানিয়েছে ইরানের ফুটবল ফেডারেশন। সেদেশের দাবি, হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সমর্থন জানাতেই এই কাজ করেছে মার্কিন ফুটবল ফেডারেশন। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক একেবারেই খারাপ। এহেন পরিস্থিতিতে পতাকার প্রসঙ্গ ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে কাতার বিশ্বকাপে মুখোমুখি হবে দুই দল। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে তারা। সেই মহাম্যাচের আগে পতাকা বিকৃতির প্রসঙ্গে মুখ খুললেন ইরানের ফুটবল দলের কোচ কার্লোস কুইরোজ।
সাংবাদিক সম্মেলনে পতাকা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তেই হয় পর্তুগিজ কোচকে। তখনই ইরানের সঙ্গে মার্কিন মুলুকের তুলনা টানেন কুইরোজ (Carlos Queiroz)। তিনি বলেন, "মানবাধিকার রক্ষার বিষয়গুলি আমরা সবসময় সমর্থন করেছি। কিন্তু সেক্ষেত্রে কেবলমাত্র একটি দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষ্য নিয়ে চর্চা করব, অন্য দেশগুলির কথা মনে রাখব না, এমনটা হতে পারে না। স্কুলে পড়াশোনা করতে বন্দুকবাজের হামলায় খুন হচ্ছে ছোট্ট শিশুরা, এটাও মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ।" নাম না করেই আমেরিকাকে বিঁধেছেন ইরানের কোচ। চলতি বছরের মে মাসেই টেক্সাসের এক প্রাথমিক স্কুলে বন্দুকবাজের হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ১৯ জন শিশুর। সাংবাদিক সম্মেলনে সেই প্রসঙ্গই টেনে আনেন কুইরোজ।
[আরও পড়ুন: ‘রোনাল্ডো নির্লজ্জ’, গোল দাবি করে নেটদুনিয়ায় কটাক্ষের শিকার পর্তুগিজ তারকা]
তবে সঙ্গে সঙ্গেই কথা পালটে ফেলেন ইরানের কোচ। তিনি বলেছেন, এই সব নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে ফুটবলেই মন দিতে চান তাঁরা। ৯০ মিনিট ধরে খেলা দেখে হাসিমুখে বাড়ি ফিরবেন ফুটবলপ্রেমীরা, সেই কারণেই মাঠে নামতে চান ইরানের ফুটবলাররা। অন্যদিকে, পতাকা বিকৃতি নিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন মার্কিন ফুটবল দলের কোচ গ্রেগ বেরহল্টার। তিনি বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কী পোস্ট করা হচ্ছে সেই বিষয়ে কোচ বা ফুটবলাররা কিছুই জানতেন না। তবে দলের তরফে তিনি সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, মাঠের বাইরের এই ঘটনা ভুলে সকলে যেন খেলা নিয়েই আলোচনা করেন।
বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ইরানের ফুটবল দলকে নিয়ে নানা বিতর্ক হয়েছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে জাতীয় সংগীত গাননি ইরানের ফুটবলাররা। হিজাব বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েই এই পদক্ষেপ করেছিলেন আজমৌনরা। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য প্রথামাফিক জাতীয় সংগীত গেয়েছিলেন তাঁরা। তখন প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি দেশের প্রশাসনের চাপে পড়ে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এলেন ফুটবলাররা? গ্রুপের শেষ ম্যাচের আগে পতাকা নিয়ে বিতর্কে জড়াল মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। জাতীয় পতাকা থেকে আল্লার চিহ্ন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে মার্কিন ফুটবল ফেডারেশনের বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে, বিশ্বকাপে খেলতে এসে ফুটবল বাদ দিয়ে রাজনৈতিক কারণেই খবরের শিরোনামে থাকল ইরান।