স্টাফ রিপোর্টার: তদন্তের স্বার্থে ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন অরূপ বিশ্বাস। তাঁর আবেদন মেনে তাঁকে সেই পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তদন্তের স্বার্থে এভাবে মন্ত্রিত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে এর আগে সে ভাবে কাউকে দেখা যায়নি।
অরূপ বিশ্বাসের এই সিদ্ধান্তের খবর জানাজানি হতেই আলোড়ন পড়ে যায় কলকাতা ময়দানে। তাঁর এই সিদ্ধান্তে ময়দানের ক্রীড়া প্রশাসকরা অরূপের পাশেই রয়েছেন। সঠিক সময়ে তদন্তের স্বার্থে নিজেকে সরিয়ে ভালো কাজ করেছেন বলে মনে করছেন অনেক ক্রীড়া প্রশাসক। তবে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী দ্রুততার সঙ্গে পুরো বিষয়টা সামলাচ্ছেন, তাতেও আশার আলো দেখছেন তাঁরা। তদন্ত শেষ হলে অপরাধীরা শাস্তি পাবে, তেমনই বিশ্বাস ময়দানের ক্রীড়া প্রশাসকদের।
মন্ত্রিত্ব থেকে অরূপ বিশ্বাসের সরে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে মোহনবাগান সচিব সৃঞ্জয় বোস বলেন, “অরূপ বিশ্বাস ক্রীড়ামন্ত্রী হিসাবে যথেষ্ট সফল। আমাদের ভুললে চলবে না অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ ফাইনাল এই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনেই হয়েছিল। সেই ফাইনালের আয়োজন দেখে ফিফা পর্যন্ত যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছিল। কেউ যেন ভুলে না যায় সেই সময় বাংলার ক্রীড়ামন্ত্রীর নাম ছিল অরূপ বিশ্বাস। ময়দানে কোন ক্লাবের, কোন ক্রীড়াবিদের কী দরকার, সব কিছুর খোঁজখবর রাখেন তিনি। কোভিডের সময় কোন ক্রীড়াবিদ খেতে পাচ্ছেন না, জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়েছেন। মেসি কাণ্ড একটা ব্যতিক্রমী ঘটনা। সেটা দিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে বিচার করা ঠিক হবে না। তদন্তের স্বার্থে তিনি ক্রীড়া দপ্তর থেকে অব্যহতি চেয়েছেন। খুবই ভালো সিদ্ধান্ত। অন্তত তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে কেউ কোনও প্রশ্ন তুলতে পারবে না।” এদিন মোহনবাগান সভাপতি দেবাশিস দত্ত বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে দ্রুততার সঙ্গে একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন, তাতে আশা করছি এই বিষয়ে দ্রুত অপরাধীরা শাস্তি পাবে। অরূপদাও আমাদের কাছের মানুষ। ভাগ্য খারাপ। তদন্তের স্বার্থে যেভাবে নিজেকে উনি সরিয়ে নিলেন মন্ত্রিত্ব থেকে সেটাও ভালো দিক।"
এদিন ইস্টবেঙ্গল শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার এই বিষয়ে বলেন, "এভাবে তদন্তের স্বার্থে নিজেকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তটা ময়দান প্রেমীরা ভালোভাবেই নেবে। সঠিক সময়ে প্রয়াস তা বলার অপেক্ষা রাখে না।" ইস্টবেঙ্গলের পাশাপাশি মহামেডান সভাপতি আমিরুদ্দিন ববি বলছেন, "অরূপ বিশ্বাস মনে করেছেন এই সময় সরে থাকা উচিত, তাই দিদিকে বলেছেন সরে দাঁড়াবেন। দিদি ওঁর অব্যাহতির আবেদন মেনে নিয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে ওঁর সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তটা ওঁর একেবারে ব্যক্তিগত।" আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত বলেন, "আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর উপর পুরো আস্থা আছে। খেলাধূলোর উন্নতির স্বার্থে যা সঠিক সেই পদক্ষেপই উনি নেবেন।"
