সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খেলাধুলা এক জিনিস। রাজনীতি আরেক। দুই বিভাগের দূরত্ব কয়েক হাজার যোজন। রাজনীতিকে তাই খেলাধুলা থেকে দূরে রাখা উচিত বলেই মনে করেন অনেকে। বিশ্বজয়ী ফুটবলার লিওনেল মেসি 'গোট ট্যুর' শেষে যে আবেগঘন ভিডিও পোস্ট করলেন, সেখানে ঠিক যেন এই শিক্ষাটাই দিলেন। তিনি যেন ঘুরিয়ে 'মূল সমস্যা' মেটানোর বার্তা দিয়ে গেলেন।
সোশাল মিডিয়ায় এক মিনিটের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন মেসি। সেখানে কলকাতায় ৭০ ফুট মূর্তি উন্মোচনের অংশ রয়েছে। তবে যুবভারতীর কোনও মুহূর্ত নেই সেখানে। বরং এরপর হায়দরাবাদ, মুম্বই বা দিল্লিতে তিনি যেভাবে মঞ্চ মাতিয়েছেন, সেগুলো আছে। সেই ভিডিওয় সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, করিনা কাপুর বা শচীন তেণ্ডুলকরের সঙ্গে সাক্ষাতের অংশ আছে। আর আছে অনেক খুদে ভক্তদের সঙ্গে তাঁর কাটানো বিভিন্ন মুহূর্ত। কিন্তু নেই অনেক কিছুই।
কেন যুবভারতীর নামগন্ধ নেই মেসির ভিডিওয়, তা অবশ্য অনুমেয়। যেভাবে ডামাডোল হয়েছে সল্টলেক স্টেডিয়ামে, অনেকেই বলছেন, মেসি হয়তো ভদ্রতার খাতিরে সেখানকার অংশ বাদ রেখেছেন। তবে মেসির ভিডিওতে যুবভারতীর যেমন কোনও মুহূর্ত নেই, তেমনই নেই আরও একটা বিষয়। তা হল রাজনীতি। তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, দিল্লি - এই তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল আর্জেন্তিনীয় রাজপুত্রর। কিন্তু মেসি তাঁর ভিডিওয় রেবন্ত রেড্ডি, দেবেন্দ্র ফড়ণবিস কিংবা রেখা গুপ্তার সঙ্গে কোনও ছবি রাখেননি।
দেবেন্দ্র ফড়ণবিস হোক রেখা গুপ্তা, সঙ্গে ফুটবলের যোগ তেমন নেই। কিন্তু রেবন্ত রেড্ডি? তিনি তো মেসির সঙ্গে ফুটবল খেলবেন বলে ছ'মাস রীতিমতো অনুশীলন করেছেন। হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়াম ঘুরে দেখার পর তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির সঙ্গে ফুটবল খেলেন মেসি। সেখানে তো ফুটবলার বেশে আবির্ভূত রেবন্তকে আর্জেন্টিনা অধিনায়ককে পাস-টাসও বাড়াতে দেখা যায়। সেখানে তো আবার রাহুল গান্ধীর সঙ্গেও দেখা হয়েছিল। কিন্তু সেই সব ছবিও স্থান পেল না ওই ভিডিওয়। এখানেই প্রশ্ন, মেসি কি বোঝাতে চাইলেন, খেলাধুলায় রাজনীতির কোনও জায়গা নেই? এ ব্যাপারে সমস্ত দলই যেন তাঁর কাছে পরিত্যাজ্য!
প্রসঙ্গত উদ্ধৃত করা যাক মেসির দেশের সংবাদমাধ্যম 'ক্লারিন'-এর বক্তব্য, 'মেসিকে বিপন্ন করে তোলা হয়েছিল। রাজনৈতিক নেতা ও কর্মকর্তাদের পাঁচিলের ঢাকা পড়ে গিয়েছিলেন মেসি। যা মেসি-দর্শনে বাধা তৈরি করে। এত হুড়োহুড়িতে অনুষ্ঠানও বিঘ্নিত হয়।' যুবভারতী কাণ্ডের পর এই কথাগুলোই লিখেছিল তারা। ভারতীয় রাজনীতি নিয়ে কোনও ধারণা ধারণা থাকার কথাও নয় মেসির। কিন্তু ফুটবল জগতের এই মহাতারকা যেটা বোঝেন তা হল, খেলাধুলায় রাজনীতির ভূমিকা। হয়তো এটাই ভারতীয় ফুটবলের মূল সমস্যা। খেলার থেকে তাই দূরে থাক রাজনীতি! এই বার্তাই কি অত্যন্ত সচেতনভাবে দিয়ে গেলেন মেসি? প্রশ্নটা তোলা রইল।
