বাংলা: ১ (রবি)
কেরল: ০
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে শাপমুক্তি। অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। ফের একবার ভারতীয় ফুটবলের মানচিত্রে সেরার আসন বাংলার দখলে। ৬ বছর অপেক্ষার পর সন্তোষ ট্রফির চ্যাম্পিয়ন হল বাংলা। ফাইনালে কেরলকে ১-০ গোলে হারাল সঞ্জয় সেনের ছেলেরা। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল করলেন সেই রবি হাঁসদা। টুর্নামেন্টে ১২ গোল করে ইতিহাস গড়লেন তিনি। এই নিয়ে ৩৩ বার সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হল বাংলা।
সন্তোষ ট্রফিতে শেষবার বাংলার সাফল্য এসেছিল ২০১৬-১৭ সালে। তারপর থেকে শুধুই ব্যর্থতা। গত কয়েক বছর ধরে সেই বাংলা সন্তোষ থেকে ফিরেছে শূন্য হাতে। দুবার ফাইনালেও হারতে হয়েছে। তবে গত মরশুমে বাংলাকে বিদায় নিতে হয়েছে, একেবারে প্রাথমিক রাউন্ড থেকেই। অবশেষে সমস্ত প্রতীক্ষার অবসান।
হায়দরাবাদের গাচ্চিবৌলি স্টেডিয়ামে আক্রমণাত্মক ঢংয়েই শুরু করে বাংলা। এদিন প্রথম দলে ছিলেন না নরহরি শ্রেষ্ঠা। বরং সন্তোষে ১১ গোল করা রবি হাঁসদার উপরই ভরসা রেখেছিলেন সঞ্জয় সেন। একই সঙ্গে দলের ফরমেশনও বদলে ছিলেন তিনি। মাঝমাঠের দখল রেখেছিলেন চাকু মাণ্ডি, আদিত্য থাপারা। দুই উইং দিয়ে আক্রমণে ওঠার দায়িত্ব ছিল আবু সুফিয়ান ও মনোতোষ মাজির। কিন্তু লাগাতার আক্রমণেও দীর্ঘসময় গোলের মুখ খুলতে পারেননি রবিরা। গোলের সুযোগ এসেছিল কেরলের কাছেও। কিন্তু রক্ষণে ভরসা দেন জুয়েল মজুমদাররা। দ্বিতীয়ার্ধে আরও তেড়েফুঁড়ে ওঠে বাংলা। একাধিকবার গোলের সুযোগও এসে যায়। ম্যাচের শেষ দিকে বেশ কয়েকবার দলের পতন বাঁচান কেরলের ডিফেন্ডাররা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল করে নায়ক সেই রবি হাঁসদা। তার আগে থেকেই টানা আক্রমণ চলছিল কেরল রক্ষণে। মাঠের বাঁ প্রান্ত থেকে ভেসে আসে বিষাক্ত ক্রস। সেখান থেকে হেডে বল চলে আসে রবির পায়ে। কেরল ডিফেন্সকে স্তম্ভিত করে দিয়ে ছিটকে বেরিয়ে আসেন রবি। গোলকিপারকে পর্যুদস্ত করে জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি।
ম্যাচের পর পুরো কৃতিত্ব ফুটবলারদের দিলেন কোচ সঞ্জয় সেন। জানালেন, গত দু-আড়াই মাস ধরে কীভাবে আত্মত্যাগ করে দলকে জেতানোর জন্য ঐক্যবদ্ধ ছিলেন তাঁরা। জয় ছাড়া আর কোনও লক্ষ্যই ছিল না তাঁর কাছে। ফাইনালে উঠে ম্যাচ হারলে সমস্ত পরিশ্রমই যে বৃথা। সেই মানসিকতাই বদলে দিয়েছে বাংলাকে। ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হাল ছাড়েননি রবিরা। সুযোগ পেতেই কাজে লাগিয়েছেন তিনি। একটি সন্তোষ ট্রফিতে ১২টি গোল করে ছাপিয়ে গেলেন কিংবদন্তি মহম্মদ হাবিবকেও। আর ম্যাচের শেষে যুদ্ধজয়ের হাসি নিয়ে অধিনায়ক চাকু মাণ্ডি জানালেন, এই জয় কোচ সঞ্জয় সেনকেই উৎসর্গ করতে চান। সত্যিই তো, এত বছরের অপেক্ষার অবসান যে ঘটল তাঁর হাত ধরেই।