স্টাফ রিপোর্টার: এবারের ইউরোয় (UEFA Euro 2024) একমাত্র দল হিসাবে স্পেনই সব ম্যাচ জিতেছে। চার ম্যাচে করেছে নয় গোল। খেয়েছে মাত্র একটা, যা প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে কম। এমন দলের বিরুদ্ধে সাফল্যের জন্য এক স্প্যানিশ ক্লাবের দর্শনকেই ‘মন্ত্র’ করছে জার্মানি।
শুক্রবার স্টুটগার্টে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে স্পেন আর জার্মানি। ১৬ বছর আগের ফাইনালের রিপ্লে ম্যাচকে দেখা হচ্ছে কার্যত ফাইনাল হিসাবে। বলাবলি চলছে, এই ম্যাচের বিজয়ীর হাতেই ট্রফি ওঠার সম্ভাবনা বেশি। কারণ এবার ইউরোয় (Euro Cup 2024) দুরন্ত ফর্মে আছে দু’টো দলই। স্পেনের মতো জার্মানিও এখনও ইউরোয় অপরাজিত। শেষ আটে পৌঁছানোর পথে দশ গোল করেছে জার্মানরা, খেয়েছে দু’টো। অবশ্য গত ৩৬ বছরে কোনও প্রতিযোগিতার মঞ্চে জার্মানির কাছে হারেনি স্পেন (Spain)। সেই ইতিহাস বদলের জন্য জার্মানদের হাতিয়ার রিয়াল মাদ্রিদের দর্শন। অধিনায়ক ইকে গুন্দোগান শুনিয়েছেন সে কথাই, “প্রতিপক্ষের পায়ে বল যাবেই। কিন্তু তা নিয়ে চাপে পড়লে চলবে না। এক্ষেত্রে রিয়াল মাদ্রিদ সবচেয়ে বড় উদাহরণ। ওরা অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মাথা ঠাণ্ডা রেখে খেলে। এমনকি প্রয়োজনে নিজেদের বক্সে দশজন মিলেও ডিফেন্স করে। একইসঙ্গে ওরা অপেক্ষা করে সুযোগের জন্য। আর যখন বল ওদের পায়ে পৌঁছায়, ওরা সেটা দারুণভাবে ব্যবহার করে।”
[আরও পড়ুন: মালদহ মেডিক্যালের মুকুটে নতুন পালক, চালু উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় আই ব্যাঙ্ক]
ক্লাব ফুটবলে গুন্দোগান খেলেন রিয়ালের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনায় (Barcelona)। ফলে রিয়াল তথা স্প্যানিশ ফুটবলের মনস্তত্ব অচেনা নয় তাঁর কাছে। সেই কারণে মাঠে রিয়াল-দর্শনের বাস্তবায়নের জন্য ভরসা করছেন তাঁর মতোই দুই বিভীষণ টনি ক্রুজ এবং আন্তোনিও রুডিগারের উপর, যাঁরা খেলেন মাদ্রিদের ক্লাবটির হয়েই। “আমাদের কাছে ক্রুজ ও রুডিগারের মতো দু’জন প্লেয়ার আছে যারা রিয়ালের খেলার এই শৈলীর সঙ্গে সুপরিচিত। দলের বাকিরাও সেই অভিজ্ঞতার ভাগ পাচ্ছে। আসলে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করাটা এই ম্যাচে আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হতে চলেছে। সেটা করতে পারলে ম্যাচের ফল আমাদের পক্ষে আনা সহজ হবে। দু’টো দলই এই মুহূর্তে ইউরোর সেরা ফুটবলটা খেলছে। ফলে কোনও ঝুঁকি নেওয়া যাবে না।” জার্মানির প্রথম একাদশে রিয়ালের দুই ফুটবলার থাকলেও, স্পেনে থাকতে পারেন মাত্র একজন- রাইটব্যাক ড্যানি কার্বাহল। স্কোয়াডে থাকলেও নাচো ফার্নান্ডেজ ও হোসেলুর শুরু থেকে খেলার সম্ভাবনা কম।
[আরও পড়ুন: ব্রিটেনের নির্বাচনে লেবার পার্টির ঝড়, ফলপ্রকাশ শেষের আগেই হার স্বীকার করে দুঃখপ্রকাশ ঋষির]
অবশ্য এক ‘বিভীষণ’ হাতিয়ার হতে পারেন স্পেন কোচ লুইস ডে লা ফুয়েন্তের। আরবি লিপজিগের দায়িত্বে থাকার সময় ডায়নামো জাগ্রেব থেকে ড্যানি ওলমোকে দলে এনেছিলেন জার্মানির বর্তমান কোচ জুলিয়ান নাগেলসম্যান। সেই ওলমো শেষ ম্যাচে পরিবর্ত হিসাবে নেমে জর্জিয়ার বিরুদ্ধে গোল পেয়েছেন। লামিন ইয়ামাল, নিকো উইলিয়ামস, ফ্যাবিয়ান রুইজের মতো তারকাদের পাশাপাশি সেই ওলমোকে নিয়েও ভাবতে হচ্ছে নাগেলসম্যানকে। উল্টোদিকে এই ফুটবলারদের উপস্থিতি ভরসা দিচ্ছে কোচ লুইসকে। “জার্মানি খুব ভালো দল। গুছিয়ে ফুটবলটা খেলে। কিন্তু এবার ওদের লড়াই এমন একটা দলের সঙ্গে যারা মাঠে ওদের মতোই। শক্তিশালী, একমুখী, অদম্য, জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত। একটা কথা বলতে পারি, ছোট ছোট বিষয়ই এই ম্যাচে তফাত গড়ে দেবে,” বলছেন স্পেনের হেডস্যর। অতএব, ইউরোর ‘সম্ভাব্য’ সেরা ম্যাচটা দেখার জন্য অপেক্ষা আর কয়েক ঘণ্টার।