সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেড় যুগ আগের বার্লিন। অলিম্পিয়াস্টাডিওনে ক্রোয়েশিয়া মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিলের। সেদিন টিম লিস্টে নাম থাকলেও মাঠে নামা হয়নি বছর কুড়ির এক ফুটবলারের।
তারপর কেটে গিয়েছে আঠারোটা বছর। সেদিনে সদ্য তরুণ ফুটবলার এখন বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় নামদের মধ্যে একজন। লুকা মদ্রিচ নামটার সঙ্গে দরকার হয় না কোনও বিশেষণের! এই ইউরো যাঁর ক্রোয়েশিয়ার হয়ে নবম বড় প্রতিযোগিতা। শনিবার রাতে সেই অলিম্পিয়াস্টাডিওনেই স্পেনের বিরুদ্ধে নামতে চলা ক্রোয়েশিয়ার অধিনায়ক তিনি। একইসঙ্গে একটা প্রশ্ন উঠছে, এটাই কি দেশের হয়ে তাঁর শেষ বড় প্রতিযোগিতা (UEFA EURO 2024) হতে চলেছে?
[আরও পড়ুন: তারুণ্য আর গতিতে অপ্রতিরোধ্য জার্মানি, স্কটল্যান্ডকে উড়িয়ে ইউরো শুরু মুসিয়ালাদের]
মদ্রিচকে (Luka Modric) যাঁরা খুব কাছ থেকে চেনেন, তাঁরা অবশ্য মনে করছেন, এটাই শেষ নয়। যেমন ক্রোয়েশিয়ার (Croatia) প্রাক্তন কোচ স্লাভেন বিলিচ। “আমি বিশ্বাস করি না। লুকাকে নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলার উপায় নেই,” বলে দিয়েছেন তিনি।
আর মদ্রিচ? তিনি কী বলছেন? ক্রোট মহাতারকা অবশ্য এখন ইউরো ছাড়া অন্য কোনওদিকে নজর দিচ্ছেন না। বলা ভালো, প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ স্পেনেই তাঁর যাবতীয় মাথাব্যথা সীমাবদ্ধ। ইউরোয় টানা চতুর্থবার মুখোমুখি হতে চলেছে মদ্রিচের ক্রোয়েশিয়া। শেষবার ক্রোটদের ইউরো-যাত্রা প্রি-কোয়ার্টর ফাইনালে থেমে গিয়েছিল স্পেনের (Spain) কাছে হেরে। তারপর গতবছর নেশনস লিগ ফাইনালেও রানার্স হতে হয়েছে একই প্রতিপক্ষের কাছে হেরে।
সেই দেশের মুখোমুখি হওয়ার আগে মদ্রিচ বলছিলেন, “দু’টো দল একে অপরকে ভালোমতোই চেনে। ফলে জিততে হলে প্রতি মুহূর্তে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে।” বিশ্বকাপের ফাইনাল খেললেও ইউরোর আসরে বলার মতো সাফল্য নেই ক্রোয়েশিয়ার। তবে ইউরোপ সেরার লড়াইটা বিশ্বজয়ের যুদ্ধ থেকে সহজ বলেই মনে করছেন মদ্রিচ। সম্প্রতি একই কথা শোনা গিয়েছে লিওনেল মেসির মুখেও। এবার আর্জেন্টাইন এলএম১০-এর সুরে সুর মিলিয়ে ক্রোট এলএম১০ বলেছেন, “আমি ইউরোর সঙ্গে বিশ্বকাপের তুলনা করতে চাই না। বিশ্বকাপে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, চিলির মতো দেশ থাকে। বিশ্বের সেরা দেশগুলি যে প্রতিযোগিতা জেতার জন্য লড়াই করে, তাকে তো এগিয়ে রাখতেই হবে।”
করোনা-পরবর্তী পৃথিবীতে স্পেনের কাছে পরপর দু’টো আসরে হেরে শেষ হয়েছে ক্রোয়েশিয়ার খেতাব-স্বপ্ন। এবার এই দুই দলের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে ইতালি এবং আলবেনিয়া। এমন গ্রুপ থেকে পরের পর্বে যাওয়ার কাজটা যে কঠিন, তা বলাই বাহুল্য। তাই প্রথম ম্যাচটা জিতে ইউরো অভিযানে শুরুটা ভালোভাবে করতে চাইবে দু’পক্ষই। ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণে মদ্রিচ ছাড়াও আছেন মাতেও কোভাচিচ, মার্সেলো ব্রোজোভিচ, আন্দ্রেই ক্রামারিচের মতো সিনিয়ররা। তবে কোচ জ্লাটকো ডালিচের দলে রক্ষণ সামলানোর দায়িত্বে জাসকো ভার্ডিওল, জোসিপ স্ট্যানিসিচ, জোসিপ সুতালোর মতো তরুণরা। তবে তারুণ্যের বিচারে কিছুটা এগিয়েই থাকবে স্পেন। কিশোর লামিন ইয়ামালকে নিয়ে ইতিমধ্যেই ফুটবলবিশ্বে আলোচনা তুঙ্গে।
বছর ষোলোর এই মিডফিল্ডার ছাড়াও পেদ্রি, নিকো উইলিয়ামস, আলভারো মোরাতা, ড্যানি ওলমোরা বড় ভরসা স্পেন কোচ লুইস ডে লা ফন্তের। দালিচ মুখে বলছেন বটে যে, তাঁরা পুরনো ফলাফল মাথায় রাখছেন না। এটা বদলার ম্যাচ নয়। কিন্তু দলকে সতর্ক করে রেখেছেন স্পেন কোচ লুইস।
আসলে মদ্রিচ যে একাই ছারখার করে দিতে পারেন প্রতিপক্ষ দলকে, তা তো এক যুগ ধরেই দেখছে স্পেন। ক্লাব ফুটবলে, রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে।
আজ ইউরোয়
(স্পেন বনাম ক্রোয়েশিয়া, রাত ৯.৩০, বার্লিন
সোনি টেন নেটওয়ার্ক
হাঙ্গেরি বনাম সুইজারল্যান্ড, কোলন, সন্ধে ৬.৩০
সোনি টেন নেটওয়ার্ক)