সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গাদের (Rohingya) পুনর্বাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার জন্য বিদেশি সংস্থাগুলিকে দায়ী করলেন বাংলাদেশের (Bangladesh) বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি দাবি করেন যে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য ভালভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবাসনগুলি উন্নতমানের, এলাকার পরিবেশও ভাল বলে দাবি বিদেশমন্ত্রীর। এরপরই তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, কিছু এনজিও ও বিদেশি শক্তি রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে যেতে নিরুৎসাহিত করছে।
রবিবার দুপুরে রাজশাহী কলেজ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। সেখানে শিক্ষকদের আয়োজনে এক সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এখানকার ভাষণেই তিনি রোহিঙ্গা ইস্যু উত্থাপন করেন। বলেন, ”ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য যে আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা খুবই উন্নতমানের। শিগগিরই রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। রোহিঙ্গারা এখন যেখানে আছেন, সেখানে তিন বেলা খাচ্ছেন আর নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন। কিন্তু ভাসানচর চমৎকার জায়গা। এখনও পর্যন্ত ৩০৬ জনকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে বসবাসকারী রোহিঙ্গা নারীরা কাজ শুরু করেছেন।” তাঁর আরও দাবি, অনেক রোহিঙ্গাই সেখানে যেতে ইচ্ছুক। তবে বেশ কয়েকটি এনজিও এবং বিদেশি শক্তি তাঁদের ভাসানচরে যেতে নিরুৎসাহিত করছেন। যদিও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আগামী দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারের যথেষ্ট সহযোগিতা মিলবে বলে আশা করেন মোমেন।
[আরও পড়ুন: সম্পত্তি দখলের জন্য মাদ্রাসার ভিতরেই ধর্মগুরুকে খুন! বাংলাদেশে কাঠগড়ায় জামাত]
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বিডেনের (Joe Biden) জয়ের খবর জেনে তিনি আগেই আশাপ্রকাশ করেছিলেন যে বিডেনের জমানায় বাংলাদেশ-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরও উন্নতি হবে এবং উভয়ে হাতে হাত মিলিয়ে অনেক কাজ করবে। তার মধ্যেই যে রোহিঙ্গা ইস্যুও একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য। মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে উৎখাত হওয়ার পর অসংখ্য রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থী হয়ে ঢুকে পড়েছেন বাংলাদেশ, ভারত-সহ প্রতিবেশী দেশের সীমান্তে। এর মধ্যে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি শরণার্থীর প্রবেশ ঘটেছে। এই মুহূর্তে তা দেশের উপর রীতিমতো চাপ তৈরি করেছে। অপরাধমূলক কাজকর্ম বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠছে।
[আরও পড়ুন: খালেদার সঙ্গে ‘মতের অমিল’ পুত্র তারেকের, অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত বিএনপি]
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে মায়ানমারকে বারবার বার্তা দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘও। তাতেও সু কি-র দেশের তেমন সক্রিয়তা নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ চায়, মায়ানমার এবং আন্তর্জাতিক শক্তির সাহায্য নিয়েই রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে। আমেরিকার তাতে বড়সড় ভূমিকা রয়েছে। এখন সে দেশে পালাবদলের পর কীভাবে তারা বাংলাদেশকে সাহায্য করে, সেটাই দেখার।