সুমন করাতি, হুগলি: সাধারণ মানুষের জন্য খুলে গেল চন্দননগর জাদুঘর। এতেই খুশির হওয়া চন্দননগর-সহ হুগলি জেলার মানুষের মধ্যে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে চন্দননগরের নাম। গত বছরের ৩১ আগস্ট চন্দননগর কলেজে জাদুঘর চালু হয়েছিল। তবে এতদিন সাধারণের প্রবেশাধিকার ছিল না। রবিবার থেকে তা সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হল। প্রথমদিনেই ঘুরে দেখলেন বিদেশিরা।
সশস্ত্র স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়ানোর দায়ে ১৯০৮ থেকে টানা ২৩ বছর বন্ধ ছিল চন্দননগর কলেজ। পরে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উজ্জ্বল প্রত্যাবর্তন হয়। সম্প্রতি সেই ভবন সংস্কার এবং তার একাংশে শহরের শিল্প-সংস্কৃতি, বিপ্লব আর কলেজের ইতিহাসের জাদুঘর গড়ে তোলা হয়। গত বছর ৬ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে বিপ্লবীদের স্মৃতির উদ্দেশে জাদুঘরটি উৎসর্গ করা হয়। সেই দিনই অধ্যক্ষ দেবাশিস সরকার সাধারনের জন্য জাদুঘর খুলে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
[আরও পড়ুন: ‘দেহ নিতে এখানে এসো’, স্ত্রীকে মেসেজের পরই রেললাইনে দক্ষিণ-পূর্ব রেলকর্তার দেহ উদ্ধারে রহস্য]
অধ্যক্ষ বলেছিলেন, যে শহরে জাদুঘর, সেখানকার হারিয়ে যেতে বসা ইতিহাসকে সংরক্ষিত করতে পারার মধ্যে একটা আলাদা অনুভূতি রয়েছে। সেই মতো প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো চন্দননগর রথের খোঁজ শুরু হয়। সেই রথে থাকা প্রায় ১৩ ফুট লম্বা দু’টি নিম কাঠের ঘোড়াকে জাদুঘরের সামনে বসানো হয়েছে। মাঝে থাকছে সারথী। পুরনো রথে থাকা অন্যান্য মডেলগুলিকেও আনা হয়েছে। অযত্নে পড়ে থাকা সেই সব শিল্পকলাকে ঘষে-মেঝে ঝকঝকে করে তোলার কাজ হয়েছে চত্বরেই।
রথ পরিচালন সমিতির সহ-সভাপতি রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দ্রুত অবক্ষয়ের মধ্যে থেকে ইতিহাসকে পুনরুজ্জীবিত করল চন্দননগর কলেজ। আগামী প্রজন্ম দেখবে, জানবে চন্দননগর রথের ইতিহাস।’’ অধ্যক্ষ বলেন, “বিপ্লবতীর্থ চন্দননগরে বিপ্লবীদের ত্যাগের একটা আভাস ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে জাদুঘরে। আরও নতুন নতুন বিষয় যুক্ত হচ্ছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য যাদুবাবুর পুরনো রথের কিছু অবশিষ্ট অংশ।’’ দেশের একটি বিখ্যাত ভ্রমণ সংস্থা মারফত ৩০ জন বিদেশি এই জাদুঘর দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। রবিবার তাঁদের আসার সঙ্গে সঙ্গেই সকলের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই জাদুঘর। এখন থেকে প্রতি শনি ও রবিবার বিকেল তিনটে থেকে ছ’টা পর্যন্ত তা খোলা থাকবে এই ঐতিহাসিক জাদুঘর। আর জাদুঘর সকলের জন্য খুলে যাওয়ায় চন্দননগরের এক বাসিন্দা বলেন,এটা সত্যি একটা আনন্দের দিন।চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো এমনিতেই পৃথিবী বিখ্যাত।এবার নতুন সংযোজন হলো জাদুঘর।এটা একটা ঐতিহাসিক দিন।