সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনকে (Ukraine) দীর্ঘদিন ধরে সামরিক সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও সত্যি সত্যি যুদ্ধ লেগে যাওয়ার পর যেভাবে শুধু রাশিয়ার উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেই আমেরিকা চুপচাপ আছে, তাতে বিস্ময় প্রকাশ করেছে জাপান। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে তাইওয়ান প্রসঙ্গ তুলে সরাসরি প্রশ্নবাণ হেনেছেন আমেরিকার উদ্দেশে। তাঁর বক্তব্য, চিনও যদি রাশিয়ার দেখানো পথ অবলম্বন করে তাইওয়ান দখলে উদ্যোগ নেয় তা হলেও কি আমেরিকা এ রকম উদাসীন হয়েই থাকবে! এ ব্যাপারে আমেরিকার অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট উত্তরের দাবি তোলেন আবে। পাশাপাশি জাপানের আনবিক নীতি বদলের পক্ষেও সওয়াল করেন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, স্বশাসিত দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানকে অনেক দিন ধরেই নিজেদের বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসাবে বিবেচনা করে থাকে চিন। সাম্প্রতিক সময়ে গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত এই দ্বীপটির উপর চিনের সার্বভৌমত্বের দাবি সোজাসুজি জানাতে শুরু করেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তার প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ানের সরকার বলে, তারা শান্তি চায় কিন্তু প্রয়োজন হলে আত্মরক্ষা করবে। তাইওয়ানকেও সামরিক সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি বরাবর দিয়ে এসেছে আমেরিকা। কিন্তু চিন সত্যি সত্যি আক্রমণ করলে তাইওয়ান মতো একা একা লড়তে বাধ্য হবে না তো! সেই প্রশ্নই উঠে এসেছে আবের গলায়।
[আরও পড়ুন: পরপুরুষে মজেছেন স্ত্রী, প্রতিশোধ নিতে খুনের পর দেহ ২১ টুকরো করে ডোবায় ফেলল স্বামী]
জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাইওয়ানে সশস্ত্র চিনা আক্রমণ জাপানের জন্যও তা মারাত্মক বিপদ হয়ে উঠতে পারে। চুক্তি অনুযায়ী তাইওয়ানের আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে আমেরিকা সমর্থন দিতে বাধ্য। কিন্তু ইউক্রেনকে সাহায্য করার ব্যাপারে আমেরিকা যে রকম চুপচাপ রয়েছে, তাতে আর নিশ্চিন্ত বোধ করছে না জাপান, তাইওয়ানের মতো দেশগুলো! ওয়াকিবহাল মহল বলছে, জাপানের উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কারণ, চিন আগ্রাসী হলে শুধু তাইওয়ান নয়, হামলা হবে জাপানের সেনকাকু দ্বীপেও। এদিকে চিনের মতো আনবিক শক্তিধারী দেশ জাপানের অংশে পালটা লড়াই করার মতো পারমাণবিক শক্তি তাদের হাতে নেই। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে জাপানের মাটিতে আণবিক অস্ত্র উৎপাদন হয় না। বরং এক্ষেত্রে তারা আমেরিকার উপর নির্ভরশীল।
এদিকে ইউক্রেন হামলার পর আমেরিকার অবস্থান দেখে শঙ্কিত জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। এক টিভি শো তে এসে শিনজো আবে বলেন, “জাপানের আণবিক নীতি বদল করা উচিত। কীভাবে বিশ্বের নিরাপত্তা রক্ষা করা যায় সেটা দেখতে হবে। নীতি বদল করে আণবিক শক্তি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতে হবে।” যদিও সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী।