অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতির পদ থেকে সদ্য ইস্তফা দিয়েছেন। হাতে তুলে নিয়েছেন বিজেপির দলীয় পতাকা। আর ঠিক এই প্রেক্ষাপটে বঙ্গসফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শিলিগুড়িতে সভা। এই প্রথমবার বিজেপির জনসভায় মঞ্চে দেখা যাবে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে। তবে তার আগে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে জোরাল সওয়াল করলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। বাংলার আইনশৃঙ্খলা কার্যত ভেঙে পড়েছে বলেই দাবি তাঁর।
শনিবার সকাল ১১টা ১৫ মিনিট নাগাদ শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিজেপি নেতা শংকর ঘোষ তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে আসেন। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অভিজিৎ। রাজ্যের পরিস্থিতি খারাপ বলেই দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, “রাজ্যের সাংঘাতিক খারাপ অবস্থা। এ রাজ্যে কোনও আইনশৃঙ্খলা নেই। পুলিশ সাধারণ মানুষ, সাংবাদিকদের হ্যারাস করছে। উপর মহলের নির্দেশে করছে। চূড়ান্ত অগণতান্ত্রিক অবস্থা। বেশিদিন চলতে পারে না। ৩৫৬ করা দরকার।” সন্দেশখালিতে অশান্তির ইস্যুতেও মুখ খোলেন প্রাক্তন বিচারপতি। এই প্রসঙ্গে সাংসদ নুসরত জাহানেরও জোরাল সমালোচনা করেন। ইডি হামলার পর থেকে প্রায় মাসদুয়েক কেটে গেলেও কেন তারকা সাংসদ সন্দেশখালিতে গেলেন না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন বিচারপতি।
[আরও পড়ুন: ‘আমার শরীর নিয়ে খেলা করেছে!’, আদিল ফের বিয়ে করতেই গর্জে উঠলেন রাখি]
বিজেপি বার বার রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি করেছে। শুভেন্দু অধিকারীরা রাজ্যপালের কাছেও এ বিষয়ে তদ্বির করেছেন। তবে তার তীব্র বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শান্তনু সেনের দাবি, “এতদিন বিজেপির কথা ভেবে একের পর এক রায় দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার মোদির কাছে নম্বর বাড়াতে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করছেন।” বলে রাখা ভালো, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এদিন একান্তে কথাও হতে পারে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের। কী কথা বলতে পারেন, তা নাকি ইতিমধ্যে ভেবেও রেখেছেন। সেই সাক্ষাতেই কি তবে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানাবেন গঙ্গোপাধ্যায়, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। যদিও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, মোদির মুখোমুখি হওয়ার কথা ভেবে তিনি শিহরিত। কী কথা হবে, সে বিষয়ে কাউকে কিছু এখনই বলবেন না বলেই সাফ জানান তিনি।
এদিকে, এদিন মোদির সভায় যোগ দিতে যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রিপোর্ট কার্ড দেন প্রাক্তন বিচারপতি। তাঁকে শূন্য দেন অভিজিৎ। আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিপুল ভোটে জিতবে বলেই দাবি প্রাক্তন বিচারপতির। বলেন, “বিজেপি নির্বাচনে কত আসন পেতে পারেন আমি বলতে পারব না। নির্বাচন যদি অবাধ হয় ব়্যাগিং আটকানো যায় ভালো ফল করবে।” জল্পনা চলছে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় হয়তো তমলুক থেকে প্রার্থী হতে পারেন। প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগেই নন্দীগ্রামের ১ নম্বর ব্লকের হরিপুরে দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রাক্তন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, “কোথাও দাঁড়াব নাকি দাঁড়াব না, তা জানি না। দল যা বলবে, সেই অনুযায়ী কাজ করব।”
দেখুন ভিডিও: