সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোহনবাগানের প্রাক্তন কোচ টিকে চাত্তুনি প্রয়াত। তাঁর কোচিংয়ে প্রথম বার জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়ন হয় সবুজ-মেরুন। বুধবার সকাল ৭.৪৫ মিনিট নাগাদ তিনি প্রয়াত হন। তাঁর শরীরে থাবা বসিয়েছিল ক্যানসার। বহু কঠিন ম্যাচ তিনি জিতেছেন কোচিং জীবনে। কিন্তু এই লড়াইয়ে আর জিততে পারলেন না। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ কলকাতা ময়দানও।
অমল দত্তর ডায়মন্ড সিস্টেম তখন ঝড় তুলেছে। ১৯৯৭ সালের ফেডারেশন কাপে মোহনবাগান অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগোচ্ছিল। সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের কাছে ছন্দপতন হয় সবুজ-মেরুনের। ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে সেবারের ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল চাত্তুনির সালগাওকর। তখনও কি চাত্তুনি জানতেন, তাঁকেই জাতীয় লিগে নিতে হবে মোহনবাগানের দায়িত্ব!
[আরও পড়ুন: টানটান লড়াই বেঙ্গল প্রো টি-২০র প্রথম ম্যাচে, জয় পেল শিলিগুড়ি স্ট্রাইকার্স]
অমল দত্তর জায়গাতেই সালগাওকর থেকে চাত্তুনিকে কোচ করে আনা হয়েছিল সবুজ-মেরুনে। তার পরের ঘটনা ইতিহাস। স্বল্পকালের দায়িত্বে মোহনবাগানকে জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়ন (১৯৯৭-৯৮) করেন চাত্তুনি। কেরলের প্রাক্তন এই ফুটবলার এবং কোচের মৃত্যুতে ব্যথিত মোহনবাগানের প্রাক্তন ফুটবলার সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও। প্রথম জাতীয় লিগ জয়ী মোহনবাগানের সদস্য ছিলেন তিনিও।
এদিন স্মৃতিরোমন্থন করে সত্যজিৎ বলছিলেন, ''অমলদার (দত্ত) জায়গায় সালগাওকর থেকে এসেছিলেন চাত্তুনি। অমলদা ঠিক যে জায়াগায় মোহনবাগানকে পৌঁছে দিয়েছিলেন, ঠিক সেই জায়গা থেকে চাত্তুনি দলটাকে ধরেন এবং তিনি শেষ করেন দলকে শিখরে তুলে। অমলদার ছেড়ে যাওয়া চেয়ারে বসে কাজ করা কিন্তু খুবই কঠিন। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মতো দলে কোচিং করাটাও খুবই কঠিন। নতুন এক জায়গা থেকে এসে চাত্তুনি যেভাবে মোহনবাগানকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন, তা অবিশ্বাস্য।''
কলকাতা ফুটবলে বেশিদিন কোচিং করাতে দেখা যায়নি চাত্তুনিকে। সেই বিষয়ে সত্যজিৎ বলছিলেন, ''কলকাতা ওকে আরও কয়েকদিন পেলে এখানকার ফুটবলই সমৃদ্ধ হত। চাত্তুনির চলে যাওয়া বড় ক্ষতি।''
কেরলের ত্রিচুরের মানুষ ছিলেন চাত্তুনি। ভাস্কো, ওরকে মিলস, সেকেন্দ্রাবাদের হয়ে খেলেন তিনি। ১৯৭৩ সালে মারডেকা খেলেন দেশের জার্সিতে। সার্ভিসেস, গোয়া ও মহারাষ্ট্রের হয়ে সন্তোষ ট্রফি খেলেন। কেরল পুলিশ, এফসি কোচি, সালগাওকর, মোহনবাগান, ভিভা কেরলে কোচিং করেন কেরলের এই প্রখ্যাত কোচ। দেশের অন্যতম সেরা ফুটবলার আইএম বিজয়নের প্রথম কোচও তিনি।
সব সময়ে হাস্যমুখে থাকতেন। কলকাতায় এলে মোহনবাগান ক্লাবে যেতেন। কলকাতার ফুটবলের খোঁজখবর নিতেন কেরলে বসেই। তাঁর প্রয়াণে ভারতীয় ফুটবলেও নেমে এল শোকের ছায়া।