সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টাইটানের (Titan) ধ্বংস হয়ে যাওয়া কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এই সাবমার্সিবলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রাক্তন এক কর্তা যে প্রশ্ন তুলেছিলেন সেটা সত্যি, এমনই জানা যাচ্ছে। ওশানগেট সংস্থার সাবমার্সিবল টাইটানের নিরাপত্তা বরাবরই ছিল নড়বড়ে। আগে তিনটি ‘সফল’ অভিযান সম্পন্ন করলেও তা-ও প্রায় কান ঘেঁষে বেঁচে গিয়েছিল। টাইটান তলিয়ে যাওয়ার সাত দিন পর উঠে আসছে এই সমস্ত তথ্যই।
এর আগে যাঁরা টাইটানের যাত্রী হয়েছেন, তাঁরা জানাচ্ছেন, ডুবোজাহাজটির যে এমন পরিণতি হবে সে ব্যাপারে তাঁদের আশঙ্কা ছিলই। আর এর জন্য তাঁরা দুষছেন ওশানগেটের সিইও স্টকটন রাশকে। তলিয়ে যাওয়া টাইটানের পাইলটের দায়িত্বে ছিলেন তিনি নিজেই। কিন্তু এই স্টকটনই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তাঁর ডুবোজাহাজটি নিয়ে। আর সেই কারণেই টাইটানের এমন পরিণতি, দাবি তাঁদের।
[আরও পড়ুন: মোদিকে প্রশ্নের জেরে হেনস্থার মুখে মার্কিন সাংবাদিক! কড়া প্রতিক্রিয়া হোয়াইট হাউসের]
ডিসকভারি চ্যানেলের ক্যামেরা অপারেটর ব্রায়ান উইড জানাচ্ছেন, “আমি একশো শতাংশ নিশ্চিত ছিলাম এমন ভয়ানক কিছু ঘটতে চলেছে।” ২০২১ সালের মে মাসে তিনি টাইটানে টেস্ট ড্রাইভে সওয়ার হয়েছিলেন। মাত্র ১০০ ফুট গভীরে নেমেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেবারই তাঁরা প্রবল সমস্যার মুখে পড়ে টাইটান। উইড জানাচ্ছেন, টাইটানের প্রপালশন ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটেছিল। সাড়া দিচ্ছিল না কম্পিউটারগুলি। সমস্ত রকমের যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল উপরের সঙ্গে। উইড ভেবেই পাচ্ছেন না, কী করে এই যানটি সাড়ে ১২ হাজার ফুট গভীরে ডুব দেওয়ার ঝুঁকি নিল!
তবে সকলেরই প্রাণ কাঁদছে বছর ১৯-এর তরুণ সুলেমানের জন্য। তাঁর মা, শাহজাদা দাউদের স্ত্রী ক্রিস্টিন জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে ভীষণ ভালবাসত রুবিকস কিউব সলভ করতে। সারাক্ষণ সেটা নিয়েই ব্যস্ত থাকত। টাইটানে সওয়ার হওয়ার সময় মাকে বলে গিয়েছিল, ১২ হাজার ফুট জলের তলায় রুবিকস কিউব সলভ করে নতুন কিছু করতে চায় সে। আর শিশুর মতো উচ্ছ্বসিত ছিলেন শাহজাদা। যাত্রা শুরু সময় বাবা-ছেলে একসঙ্গে টাইটানিক দেখবেন এই উত্তেজনাতেই ফুটছিলেন তিনি। যদিও ৯৬ ঘণ্টা পার হতেই সব আশা নিভে যায় তাঁদের, জানিয়েছেন ক্রিস্টিন।