অর্ণব দাস, বারাসত: আর জি করের সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সদ্য মা হওয়া স্ত্রীর পেটে লাথি মারার অভিযোগ তুললেন তার বারাসতের এক সময়ের প্রতিবেশীরা। ফলে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদরে এখন কার্যত ভিলেন উঠেছেন বিতর্কিত এই প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
আর জি করের তরুণী চিকিৎসকের মর্মান্তিক পরিণতির ন্যায়বিচার চাওয়ার পাশাপাশি সমান্তরালভাবে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও সমালোচনা শুরু হয়েছে এলাকায়। কর্মসূত্রে ২০০৮-০৯ সাল থেকে মল্লিকবাগানে বাড়ি কিনেছিলেন সন্দীপ ঘোষ। বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত থাকার পাশাপাশি বাড়ির নিচেই ছিল তাঁর চেম্বার। সেই চেম্বারের বাইরে নেমপ্লেটে লেখা ছিল ডাক্তার এস ঘোষ। এই নামেই এলাকায় পরিচিত ছিলেন তিনি। তবে, এলাকায় তেমন মেলামেশা করতেন না এই চিকিৎসক। বছর পাঁচ-ছয় তিনি সেখানে থাকার পর অবশ্য বাড়ি বিক্রি করে চলে যান।
[আরও পড়ুন: শরীর স্পর্শ করতেই চিৎকার, বারণ না শোনায় তরুণীর মাথা ঠুকে দিই! পুলিশকে জানায় সঞ্জয়]
অভিযোগ, প্রতিবেশীদের সঙ্গে তাঁর কখনও সদ্ভাব তো ছিলই না। বরং খারাপ আচরণের কারণে বাড়ি বিক্রির পরে কেউই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেনি। চেম্বারে পরিষেবা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার পাশাপাশি পরিবারের সঙ্গেও সে অশালীন আচরণ, এমনকী স্ত্রীকে মারধর করত বলেই অভিযোগ তুলেছেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের মতে, চিকিৎসক হিসাবে এস ঘোষ যতটা না পরিচিত ছিলেন, এর কয়েক গুণ বেশি তিনি পরিচিত হয়েছিলেন, সদ্য প্রসব হওয়া স্ত্রীর পেটে লাথি মারার কারণে।
সন্দীপ ঘোষের এই কুকীর্তির প্রসঙ্গে প্রতিবেশীরা জানান, মাত্র ১৪ দিন হয়েছিল চিকিৎসকের স্ত্রী প্রসব করেছেন। চিকিৎসকের মা-ও তখন তাদের সঙ্গেই থাকতেন। অভিযোগ, মা এবং ছেলে মিলেই স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করত। একদিন পারিবারিক কোনও বিষয় নিয়ে গণ্ডগোলের সময়ই সদ্য প্রসব হওয়া স্ত্রীর পেটে গুণধর এই চিকিৎসক লাথি মেরেছিলেন বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের। এর পরে স্ত্রীকে ঘরে আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ তাদের। বিষয়টি জানাজানি হতেই স্থানীয় ক্লাবের কয়েকজন এসে ঘরে আটকে থাকা স্ত্রীকে উদ্ধার করেন।
[আরও পড়ুন: ‘ধর্ষণের অপরাধীদের দ্রুত কঠোর শাস্তি’, আর জি কর আবহে মাঝে রাজ্য সরকারগুলিকে কড়া বার্তা মোদির]
প্রতিবেশী মিহির চক্রবর্তীর কথায়, "প্রথমে আমাদের ঘরেই ঢুকতে দিচ্ছিল না। ওদিকে তাঁর স্ত্রী কাঁদছিলেন সাহায্যের জন্য। শেষে ওঁর স্ত্রীকে ঘর থেকে উদ্ধার করি। সদ্যোজাত বাচ্চাকে কোলে নিয়ে কোনওমতে বাড়ি থেকে বেরিয়েই একটা অটো নিয়ে চলে গিয়েছিলেন তিনি। সদ্যোজাত বাচ্চাটার গায়ে জামাও ছিল না।" স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল চন্দ্র দাস জানান, সন্দীপ ঘোষ মোটেই ভালো মানুষ নন। চিকিৎসকের মায়ের ব্যবহারও ছিল খুবই খারাপ।