সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে (Afghanistan) মেয়েদের একটিই স্কুল। সেই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এবার তালিবানের (Taliban) ভয়ে পুড়িয়ে দিলেন স্কুলের সমস্ত ছাত্রীর রেকর্ড। আর সেই ভিডিও পোস্ট করলেন টুইটারে (Twitter)। যা আরও একবার প্রকাশ করল তালিবান অধ্যুষিত আফগানিস্তানের আসল ছবিটা। নয়া তালিবান জমানায় সেদেশের মেয়েরা কত বড় অন্ধকারের সামনে দাঁড়িয়ে তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে ভিডিওটির ভিতরে।
গোটা আফগানিস্তানে ওই একটিই মেয়েদের স্কুল। আর সেই স্কুলের ভবিষ্যৎ এবার বিশ বাঁও জলে। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা শাবানা বাসিজ-রসিক তাঁর টুইটারে ছাত্রীদের রেকর্ড পোড়ানোর বিষয়ে লেখেন, ”আফগানিস্তানের একমাত্র মেয়েদের বোর্ডিং স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আমি সমস্ত ছাত্রীর রেকর্ড পুড়িয়ে দিলাম। ছাত্রীদের মুছে ফেলতে নয়, তাদের ও তাদের পরিবারকে রক্ষা করতে। আমি এই বিবৃতি দিচ্ছি মূলত আমাদের ছাত্রীদের পরিবারকে এটা বোঝাতে যে, আমরা এই রেকর্ড পোড়ালাম আমাদের ছাত্রীদের ও আমাদের সমর্থকদের নিরাপত্তা দিতে।”
আগুনে পোড়ানোর ভিডিওর পোস্টে তাঁকে আক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে, ”২০০২ সালের মার্চে তালিবানের পতনের পরে হাজার হাজার আফগান মেয়েকে নিকটবর্তী স্কুলে ভরতি হতে পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। কেননা তালিবান সমস্ত ছাত্রীর রেকর্ড পুড়িয়ে দিয়েছিল। তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম।”
[আরও পড়ুন: জলবায়ুর সংকটের ধাক্কায় বড় বিপদের মুখে ভারতের শিশুরা! চাঞ্চল্যকর দাবি UNICEF-এর]
আফগানিস্তানে ক্রমশই দৃঢ় হচ্ছে শাসক তালিবানের মুঠি। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ফতোয়া দেওয়া। শুরুতে তারা জানিয়েছিল, শরিয়তে মহিলাদেরও অধিকার আছে। তাদের নিরাপত্তায় তালিবান যথেষ্ট যত্নবান। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারবে দেশের মেয়েরা।
কিন্তু দিন ঘুরতে না ঘুরতেই কথায় আর কাজে আকাশ-পাতাল তফাৎ দেখিয়ে দিল জঙ্গিবাহিনী। এবার তারা কো-এড স্কুলে অর্থাৎ ছেলেমেয়ের একসঙ্গে পড়াশোনা বন্ধ করার ফতোয়া জারি করে ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতে এবার স্কুলের মেয়েদের স্কুল রেকর্ড পোড়ানোর পথে হাঁটতে হল শাবানাকে। তিনি বুঝতে পেরে গিয়েছেন। অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার পথে আবারও উলটো দিকে হাঁটতে শুরু করেছে ইতিহাস। ফের অন্ধকারে ঢোকার আগেই তাই আগুন জ্বালালেন তিনি। স্কুলের মেয়েদের নিরাপত্তা দিতেই।