সুকুমার সরকার, ঢাকা: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের (Bangladesh) স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গণহত্যা-সহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দেশের দক্ষিণ জনপদ জেলা পিরোজপুরে চোদ্দ জনকে ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (ICC) চেয়ারম্যান মহম্মদ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দেন। দণ্ডিতদের মধ্যে রয়েছে আব্দুল মান্নান হাওলাদার ওরফে আব্দুল মান্নান ডিলার ওরফে মান্নান, আশ্রাব আলি ওরফে আশরাফ আলি হাওলাদার, মহম্মদ মহারাজ হাওলাদার ওরফে হাতকাটা মহারাজ এবং মহম্মদ নুরুল আমিন হাওলাদার। এদের মধ্যে নুরুল আমিন হাওলাদার এখনও পলাতক।
রাষ্ট্রের পক্ষে এই মামলায় শুনানি করেন আইনজীবী সাহিদুর রহমান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজি এমএইচ তামিম, তিনি একইসঙ্গে পলাতক আসামির পক্ষে রাষ্ট্রের নিয়োজিত আইনজীবী। রায়ে ট্রাইব্যুনাল আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান। দণ্ডিতদের আইনজীবী গাজি এম এইচ তামিম জানান, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। মুক্তিযুদ্ধকালে অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা ও গণহত্যা-সহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। দণ্ডিতরা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান কনভেনশন মুসলিম লিগের সমর্থক হলেও গ্রেপ্তার বা বিচার শুরুর সময় তারা জামাতে ইসলামির সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
[আরও পড়ুন: খিদে সহ্য করতে না পেরে মিষ্টি খাওয়ার ‘শাস্তি’, নাবালিকার পিঠে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা, গ্রেপ্তার কাকিমা]
২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল এ মামলার তদন্ত শুরু হয়। দুই বছর তদন্তের পর ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর বিচারপ্রক্রিয়া তদন্ত প্রতিবেদন দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। সাত আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। তদন্ত চলার সময় জেলে থাকা অবস্থায় এবং বিচার চলাকালে তিন আসামির মৃত্যু হয়।
[আরও পড়ুন: কলকাতা লিগে জয়ের ধারা অব্যাহত, খিদিরপুরের বিরুদ্ধেও তিন পয়েন্ট ইস্টবেঙ্গলের]
ভান্ডারিয়া থানার পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের সাতজনকে ধরে নিয়ে হত্যা, চরখালি গ্রামের সুরবালা দাসীকে ধর্ষণ, চরখালী গ্রামের চন্দ্র কান্তি মিস্ত্রি ও মনোরঞ্জন মিস্ত্রিকে ধরে নিয়ে নির্যাতন ও পূর্ব পশারিবুনিয়া ও হাতালিয়া গ্রামের ১৮ জনকে হত্যার অভিযোগ ছাড়াও দণ্ডিতদের বিরুদ্ধে অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মত মানবতা-বিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। ট্রাইব্যুনাল হাতালিয়া গ্রামের ১৮ জনকে হত্যার অভিযোগকে গণহত্যা (1971 Massacre) হিসেবে বিবেচনা করেছেন।