রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: উপনির্বাচনে বালিগঞ্জ ও আসানসোলে বিজেপির ভরাডুবি নিশ্চিত অনুমান করেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) রাজ্য সফর ঘিরে অনিশ্চয়তার মেঘ জমছে। কারণ, ১৬ এপ্রিল, উপনির্বাচনের (By-election) গণনার দিনেই উত্তরবঙ্গ সফরে আসার কথা রয়েছে শাহর। পরদিন কলকাতায় (Kolkata) পা রাখার কথা। কিন্তু এই সফর নিয়ে আপাতত দ্বিধায় সাউথ ব্লক। কারণ, উপনির্বাচনে দুই কেন্দ্রে দলের ভরাডুবির আশঙ্কা করে বঙ্গ বিজেপির একাংশ চাইছে ওইদিন শাহ যেন বাংলায় না আসেন। দলের একাধিক সাংসদ এই প্রস্তাব ইতিমধ্যে সাউথ ব্লকে পৌঁছে দিয়েছেন।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে দলের শোচনীয় হারের পর গত এক বছরে বাংলামুখো হননি অমিত শাহ। অথচ তিনিই সেই সময় প্রতিটি সভায় ‘ইস বার, বিজেপি দু’শো পার’ বলে স্লোগান তুলেছিলেন। কিন্তু একুশের নির্বাচনে বিজেপি (BJP) আটকে গিয়েছে ৭০ আসনেই। এরপর রাজ্যে যতগুলি উপনির্বাচন হয়েছে তার প্রত্যেকটিতে পার্টি গোহারা হেরেছে। তাই উপনির্বাচনের ফলে জোড়া ধাক্কা খাওয়ার দিনেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলা সফর চাইছেন না অমিত-অনুরাগীরা। সেক্ষেত্রে শাহর সফর পিছিয়ে মে মাসে হতে পারে বলে খবর।
[আরও পড়ুন: হাত থেকে লাঠি ছিনিয়ে পুলিশকেই উদ্দাম মার যুবকের! ভাইরাল ভিডিও দেখে অবাক নেটিজেনরা]
শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খবর, শাহর সফর ঘিরে প্রবল অনিশ্চয়তা শুরু হয়েছে। জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ের কাছেও শাহর সফর নিয়ে কোনও সূচি এসে পৌঁছয়নি। সংঘ-ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ গোপন রিপোর্টে উপনির্বাচনে বালিগঞ্জে তৃতীয় এবং আসানসোলে দ্বিতীয় হওয়ার লড়াইয়ে নেমেছে গেরুয়া শিবির। তাই এই পরিস্থিতিতে ১৬ এপ্রিল ভোটের ফল প্রকাশের দিন রাজ্যে শাহ থাকলে সেটা দলের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও প্রবল অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
[আরও পড়ুন: ইমরানের বিদায়ে কতটা লাভবান ভারত? কাশ্মীরে ফিরবে শান্তি?]
রাজ্য সফরের আগে ‘বাংলায় গেলে খুন হয়ে যেতে পারি’ – শাহর এমন মন্তব্যকে ঘিরে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছে বিজেপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেই। কেউ মন্তব্য করেছেন, “বাংলায় বুড়ো হয়ে গেলাম, কিছুই হল না। ভাবছি উত্তরপ্রদেশে বুলডোজার বাবার রাজ্যে গিয়ে থাকব।” আরেকজনের মন্তব্য, “২০১৯ সালে এসব মনে পড়েনি কেন?” কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, “আপনার মতো দোর্দণ্ডপ্রতাপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাকে এত ভয় কেন?” জনৈক ব্যক্তি বলছেন, “বাংলায় হেরে যাওয়ার শোক ভুলতে পারছে না বিজেপি।” নেটিজেনদের সরাসরি মন্তব্য, “কলকাতার গুজরাতি সমাজ বহু দশক ধরে বাঙালিদের আতিথেয়তা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হোক অমিত শাহর এহেন বাঙালি-বিদ্বেষী মন্তব্যের জন্য। কলকাতার গুজরাতি সমাজ কি একই মনোভাব পোষণ করে?”