সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার পরে ফ্রান্স (France)। দেশের করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতির জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Modi) ফের কাঠগড়ায় তুলল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। ফরাসি সংবাদপত্র (French paper) ‘লা মঁদ’-এর সম্পাদকীয়তে রীতিমতো কড়া ভাষায় মোদির সমালোচনা করে তাঁকেই সরাসরি দায়ী করা হয়েছে এই মুহূর্তে দেশের করোনার দাপাদাপির জন্য।
দেশে লাফিয়ে বাড়ছে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। নয়া স্ট্রেনের দাপটে দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় রীতিমতো বেসামাল অবস্থা। মাত্র মাস খানেকের ব্যবধানেই দেশের দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ থেকে বেড়ে ৪ লক্ষের দোরগোড়ায় এসে হাজির। তারই মধ্যে ভ্যাকসিন, ওষুধ, অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে নাজেহাল অবস্থা কেন্দ্রর। সব মিলিয়ে গত বছরের থেকেও ভয়ংকর অবস্থার সাক্ষী দেশবাসী। এই পরিস্থিতির জন্য নরেন্দ্র মোদির ‘ঔদ্ধত্য, পরিস্থিতির আগাম আঁচ না করতে পারা অর্থাৎ অপরিণামদর্শিতা ও জনপ্রিয়তা অর্জনের চেষ্টা’কে দায়ী করা হয়েছে ওই সম্পাদকীয়তে।
[আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধে ভারতের পাশে জাপান, অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে মদত টোকিওর]
ঠিক কী লেখা হয়েছে ওই সম্পাদকীয়তে? সেখানে পরিষ্কার নরেন্দ্র মোদিকে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার জন্য দায়ী করা হয়েছে। কটাক্ষ করে লেখা হয়েছে, তিনি ‘জাতীয়তাবাদী বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তৃতা’ দিয়ে গিয়েছেন। মানুষকে রক্ষা করার থেকে আত্মপ্রচারের দিকেই তাঁর ঝোঁক ছিল বেশি। যখন হু হু করে সংক্রমণবানছে, তখনও তিনি জনসভা করেছেন। এবং সেখানেও তাঁকে মাস্ক পরতে কিংবা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে দেখা যায়নি। সেই সঙ্গে কুম্ভমেলায় কী করে লক্ষ লক্ষ মানুষকে অংশ নিতে দেওয়া হল, প্রশ্ন তোলা হয়েছে তা নিয়েও।
কেবল ২০২১ নয়, ২০২০ সালে করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়ও মোদির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, সেই সময় লকডাউনের মাধ্যমে দেশকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে তোলা হয়েছিল। লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে বিপন্ন হয়েছিলেন। তারপর ২০২১ সালে এসে আবার কোভিড সতর্কতা পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়।
সেই সঙ্গে সমালোচিত হয়েছে দেশে টিকাকরণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনাকেও। বলা হয়েছে, দেশের প্রকৃত উৎপাদন ক্ষমতার বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে তিনি বহু দেশকে টিকা দিয়েছেন। ফলে তিন মাসের মধ্যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ার ‘দ্য অস্ট্রেলিয়ান’ সংবাদপত্রও কয়েকদিন আগে ভারতে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিল। সেক্ষেত্রে অবশ্য অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস সটান জানিয়ে দিয়েছিল, এই ধরনের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’। এখন দেখার, ফরাসি এই সংবাদপত্রের এমন কড়া সমালোচনার কী প্রতিক্রিয়া জানায় নয়াদিল্লি।