সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে দল থেকে সাসপেন্ড হয়েছেন বিজেপির (BJP) দুই মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দল। তাঁদের প্রাথমিক সদস্যপদ আপাতত বাতিল করা হচ্ছে। এই শাস্তির খাঁড়া নামতেই অবশ্য নূপুর শর্মা সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু তাতে ইসলামিক দুনিয়ার রাগ কমেনি। বিজেপি নেত্রীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কার্যত গর্জে উঠেছে আরব দুনিয়া। ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কাতার (Qatar)কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি জানিয়েছিল। তার অবশ্য যথোপযুক্ত জবাবও পেল তারা। ভারতের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, মহম্মদকে নিয়ে ওই ধরনের কথাবার্তা প্রান্তিক দলগুলির কাজ। কেন্দ্রীয় সরকার এসব সমর্থন করে না। তাতে অবশ্য কাতার সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তবে বিষয়টি এভাবে আন্তর্জাতিক ইস্যু হয়ে যাওয়ায় গুরুত্ব বাড়ল আরও।
দিনকয়েক আগে বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মা (Nupur Sharma) হজরত মহম্মদের বিয়ে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তা নিয়ে দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ, অশান্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিবৃতি প্রকাশ করে বিজেপির তরফে জানানো হয়, সব ধর্মকে সম্মানের চোখে দেখে বিজেপি। বলা হয়, “ভারতের ইতিহাসে সবসময়ে সব ধর্ম একসঙ্গে বিকশিত হয়েছে। কোনও ধর্ম বা ধর্মীয় ব্যক্তির প্রতি অসম্মানজনক মন্তব্য করার তীব্র নিন্দা করছে বিজেপি। এই ধরনের কার্যকলাপকে প্রশ্রয় দেয় না বিজেপি।” এরপরই নূপুর শর্মাকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রের শাসকদল। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, দলের মতামতের বিরোধী মনোভাব পোষণ করেছেন নূপুর। সেই কারণেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। সেই সঙ্গেই দলের সমস্ত কাজ থেকেও অবিলম্বে তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে বিজেপির তরফ থেকে।
[আরও পড়ুন: কিমকে কড়া জবাব, একের পর এক ৮টি মিসাইল ছুঁড়ল আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া]
তবে বিজেপি নেত্রীর ইসলাম বিরোধী মন্তব্য ইসলামিক দুনিয়ায় অশান্তির আঁচ ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। কাতার, কুয়েত, সৌদিতে ভারত সরকারের বিরোধিতায় বিক্ষোভের পরিস্থিতি তৈরি হয়। সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত (Indian Envoy) দীপক মিত্তলকে তলব করে নিজেদের অসন্তোষের কথা ব্যক্ত করে কাতার। তাতে রাষ্ট্রদূত জানান, এসব প্রান্তিক দলের (Fringe Elements) কাজ। ভারত সরকার এ ধরনের মন্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করে না। সরকারের কাছে সমস্ত ধর্মাবলম্বীরা সমান শ্রদ্ধার। যিনি ওই মন্তব্য করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরপর অবশ্য বিতর্ক কিংবা অশান্তি খুব একটা মাথাচাড়া দিতে পারেনি।
[আরও পড়ুন: ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য’, প্রচণ্ড লড়াইয়ের মাঝেও দোনবাসের যুদ্ধক্ষেত্রে হাজির জেলেনস্কি]
পাশাপাশি, অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কান্ট্রির (OIC) তরফে এ নিয়ে ওঠা নিন্দা প্রস্তাবেরও জবাব দিয়েছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রক টুইট করে জানায়, ভারত সমস্ত ধর্মকে সমান মর্যাদা দেয়। বিষয়টি নিয়ে সংকীর্ণ মনোভাব পোষণ করার কিছু নেই।