সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার হিংসাত্মক চেহারা নিল ‘পদ্মাবতী’ নিয়ে বিক্ষোভ। ছবির মুক্তির প্রতিবাদ দেখাতে গিয়ে কোটার এক প্রেক্ষাগৃহে রীতিমতো তাণ্ডব চালাল কর্ণি সেনা। ছিঁড়ে দেওয়া হল পোস্টার, ভাঙচুর করা হল প্রেক্ষাগৃহের ভিতরে। অভিযোগ, এতকিছু হওয়ার পরও তেমন কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি রাজস্থান সরকার। বরং পরোক্ষে বিক্ষোভকারীদের পক্ষেই রয়েছে রাজ্য।
Karni Sena vandalised Aakash Mall in Kota protesting Padmavati’s trailer being shown at the Cinema Hall #Rajasthan (NOTE: Strong language) pic.twitter.com/web5T0ewtC
— ANI (@ANI) November 14, 2017
বিক্ষোভ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মঙ্গলবার রাজস্থান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুলাব চাঁদ কাটারিয়া বলেন, গণতন্ত্রে প্রত্যেকের বিক্ষোভ করার অধিকার রয়েছে। যদি কেউ শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করেন তাহলে কারও কিছু বলার নেই। আইন হাতে নিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোটার ঘটনায় ইতিমধ্যেই আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে কর্ণি সেনার নেতা মহীপাল সিংয়ের কথায়, এক বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে তাঁরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এবার যদি কোথাও কেউ আইন হাতে তুলে নেয় তাহলে তাঁদের কিছু বলার বা করার নেই। এর জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেবল হিংসার রাস্তায় বিরোধীদের না যাওয়ার অনুরোধ করেই কাজ সেরেছেন। এতেই সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
[মন্ত্রকের হস্তক্ষেপে চলচিত্র উৎসব থেকে বাদ সিনেমা, জুরি প্রধানের পদ ছাড়লেন সুজয়]
‘পদ্মাবতী’র শুটিংয়ের সময় থেকেই বিরোধ জানিয়ে আসছে কর্ণি সেনা। সেনার ভাঙচুর, তাণ্ডবের জেরেই মরুশহর থেকে শুটিং বাতিল করে ফিরে আসতে হয়েছে সঞ্জয় লীলা বনশালির টিমকে। পরে আলাদা সেট তৈরি করে সেই অংশটি শুট করতে হয়েছে। তখনই পরিচালক জানিয়েছিলেন তাঁর ছবিতে আপত্তিজনক কিছু নেই। ‘পদ্মাবতী’-তে কোনওভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়নি। রানি পদ্মাবতী ও আলাউদ্দিন খিলজির মধ্যে কোনও প্রেমের দৃশ্য নেই। বরং রাজপুত রানির শৌর্যের গাথাই তুলে ধরা হয়েছে। এতে মন গলেনি সেনার। ছবির পোস্টার বের হতেই তা পোড়ানো হয়েছে। বিক্ষোভে শামিল হয়েছে রাজপুতানা সংগঠন, ব্রাহ্মণ মহাসভাও। একের পর এক বিজেপি বিধায়ক, সাংসদের হুমকির পালাও অব্যাহত। বাধ্য হয়ে কিছুদিন আগে আবার একটি ভিডিওর মাধ্যমে পরিচালক জানান এ ছবিতে আপত্তিকর কিছু নেই। কিন্তু এরপরও বিক্ষোভ অব্যাহত।
সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। ছবির মুক্তির উপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে নারাজ। বিষয়টি সিবিএফসি-র দিকে ঠেলে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। জানিয়ে দিয়েছে, ছবির মুক্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত সেন্সর বোর্ডই নেবে। কিছুদিন আগে আবার শোনা যাচ্ছিল, নিজের ছবি বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদের দেখাতেও রাজি রয়েছেন পরিচালক। এতকিছুর পরও কোটায় প্রেক্ষাগৃহ ভাঙচুর হয়েছে। আর অনেকের দাবি, এতে পরোক্ষে রাজস্থানের বিজেপি সরকারের সায় রয়েছে।
[শরীর ছাপিয়ে প্রেমের ‘তৃষ্ণা’, সন্ধান মিলবে চলচ্চিত্র উৎসবেই]
এদিকে ছবির পদ্মাবতী ওরফে দীপিকা পাড়ুকোন এই বিষয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন। জোর গলায় নায়িকা জানিয়ে দিয়েছেন, পয়লা ডিসেম্বরই মুক্তি পাবে ছবিটি। কেউ তা আটকাতে পারবে না। এই ছবির অঙ্গ হতে পারে গর্বিত দীপিকা। এই পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলে ব্যাখা করেছেন তিনি। জানান, এমন ঘটনাগুলির জন্যই দেশ পিছিয়ে পড়ছে। নায়িকার এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। টুইট মারফত তিনি বলেছেন, নায়িকা বললেই কী দেশ পিছিয়ে পড়বে? দেশের উন্নয়ন আটকে যাবে?
অবশ্য স্বামীর মতো বিজেপি সাংসদ সমালোচনা করলেও নিজের ফিল্ম ফেডারেশনের সহকর্মীদের পাশে পেয়েছেন পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনশালি ও তাঁর টিম। ছবির পাশে দাঁড়িয়েছেন সলমন খান, অর্জুন কাপুর, প্রকাশ ঝা, আরশাদ ওয়ারসি, জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজের মতো তারকারা। স্বাধীন দেশের সকলেরই সৃষ্টির স্বাধীনতা থাকা উচিত বলে মনে করেন তাঁরা।
[খুব শিগগিরিই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছেন রাজকুমার!]
The post ‘পদ্মাবতী’ ইস্যুতে প্রেক্ষাগৃহ ভাঙচুর কর্ণি সেনার, প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন appeared first on Sangbad Pratidin.